মোঃ কাউছার ঊদ্দীন শরীফ, ঈদগাঁও:
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুরে বিছানায় দুই মেয়ে ও সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত মায়ের মরদেহ উদ্ধার করে ঈদগাঁও থানা পুলিশের দল।
বুধবার ২২ ডিসেম্বর রাত ৮ টার দিকে সিআইডির ক্রাইমসিন টিম বর্ণিত ইউনিয়নের কৈলাষের ঘোনা এলাকায় গিয়ে আলামত সংগ্রহ করার মরদেহগুলো থানা পুলিশের হেফাজতে নিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন। পরদিন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে লাশগুলো আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।নিহত তিন জনকে ঈদগাঁও ইউনিয়নের মধ্যম ভোমরিয়া ঘোনা এলাকার কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এঘটনায় ২৪ ডিসেম্বর নিহত গৃহবধূর মাতা মোহছেনা আক্তার বাদী হয়ে গৃহবধূর স্বামীসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
জানা যায়, হত্যার ৯ দিন পার হলেও এজাহারভুক্ত আসামিদেরকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আত্মগোপনে থাকা এসব ঘাতকের কারণে চরম আতঙ্কে রয়েছেন নিহতের পরিবার। এখনও গ্রেফতার না হওয়া আসামিরা হলেন-ইসলামপুর ইউনিয়নের কৈলাষের ঘোনা এলাকার মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে শহিদুল হক (৩৩), তার ভাই জিয়াউল হক (৪০) ও জিয়াউল হকের স্ত্রী লুৎফা আক্তার(৩০)।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, নিহত গৃহবধূর স্বামী শহিদুল ব্যবসার কথা বলে দুই বছর পূর্বে শশুর বাড়ির কাছ থেকে জোরপূর্বক তিন লক্ষ টাকা ধার নিয়ে আর ফেরৎ দেয়নি। প্রয়োজনীয় কাজের জন্য যৌতুক বাবদ সে গত ১৯ ডিসেম্বর আরো ২ লক্ষ টাকা শ্বশুরবাড়ি থেকে এনে দিতে স্ত্রী জিশান আক্তারকে চাপাচাপি করতে থাকে। শশুর পক্ষের লোকজন দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় শহিদুল উল্লেখিত আসামিদের যোগসাজশে তার স্ত্রীকে অকথ্য নির্যাতনের মাধ্যমে খুন করে। পরে তাকে ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে রশিতে টাঙ্গিয়ে রেখে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার নাটক মঞ্চস্থ করে। এ সময় উপস্থিত দুই শিশু কন্যার প্রতিবাদ ও কান্নাকাটিতে ক্ষুব্দ হয়ে তাদেরও খুন করে।
এব্যাপারে ঈদগাঁও থানার সাব-ইন্সপেক্টর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম জানান, অপরাধী যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তারা গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে। অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করা হবে। আত্মহত্যা নাকি হত্যা করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গৃহবধু বিষপানে আত্মহত্যা করেছে কি না তা যাচাইয়ের জন্য ভিসেরা রিপোর্ট সংরক্ষণ করে ফরেসনিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। লাশের সুরতহাল এবং ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া সাপেক্ষে প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হতে পারে।
উল্লেখ্য ২২ ডিসেম্বর জিসান আকতার (২৫) এবং তাদের মেয়ে সাইফা শহিদ জাবিন (৫) ও সাইফা শহিদ জেরিন (২) মরদেহগুলো উদ্ধারের নয় দিন অতিবাহিত হলেও আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগীরা। এ হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসীরা।