মোঃ নিজাম উদ্দিন:
বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী মৌজাধীন জলপাইতলী এলাকায় সরকারী বরাদ্দকৃত রাবার বাগান থেকে দফায় দফায় গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার ৩০ ডিসেম্বর ভোরে ফাল্গুনী লেটেক্স এর ৭৫ একর বাগানের প্রায় ডজনাধীন রাবার গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
খবর পেয়ে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ডজনাধিক সদ্যকাটা গাছের মুথাসহ ডালপালা পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর এই বাগান থেকে ৫০টির অধিক ১৫-২০ বছর বয়সী রাবার গাছ জিম্মি করে কেটে নিয়ে যায় চিহ্নিত দুর্বৃত্তরা।
ওই ঘটনায় ফাল্গুনী লেটেক্স রাবার বাগানের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রিমন্ত রোয়াজা বাদী হয়ে লামা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে আসামী করা হয়েছে চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট এলাকার মােঃ কালু (৫০) ও লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী জলপাইতলী এলাকার মোঃ জামাল (৫০) সহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে।
এ বিষয়ে ফাল্গুনী লেটেক্সের কর্মকর্তা রিমন্ত রোয়াজা অভিযোগে জানান, সরকারী রাবার প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত জলপাইতলীর ৭৫ একর জায়গায় প্রচুর অর্থ ব্যায় করে দীর্ঘ সময় ধরে রাবার উৎপাদন করে আসছেন প্রকল্প মালিক মাহামুদ আলী। যা ফাঁসিয়াখালী মৌজার ৭০ নং রাবার প্লটের দাগ নং- ৮০০৪, ৩৬ নং রাবার প্লটের দাগ নং- ৮০০৫, ৭১ নং রাবার প্লটের দাগ নং- ১৪৭৪, ১২৭৮ ও ৮২৯৭। মেসার্স ফাল্গুনী লেটেক্সের এই বাগানে প্রচুর পরিমাণ রাবার উৎপাদন হচ্ছে দেখে দুর্লোভের বশবর্তী হয় আসামীরা। তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন পর্যন্ত এই জায়গা জবর দখল, গাছ কেটে রাবার আহরণ, রাবার গাছ ও উৎপাদিত রাবার চুরি করা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৮ ডিসেম্বর সকাল ৫টার দিকে প্রায় ৫০টি রাবার গাছ কেটে নিয়ে যায়। এতে বাগান মালিকের ক্ষয়ক্ষতি হয় অন্তত দুই লক্ষাধিক টাকা।
এসময় বাধা দিতে চাইলে বাগান পাহারায় নিয়োজিত আনসার সদস্য শহীদ, ইসমাইল, নজরুলের উপর হামলা ও হত্যার চেষ্টা চালায়। এ খবর পেয়ে আমি (ফাল্গুনী লেটেক্সের কর্মকর্তা) ঘটনাস্থলে আব্দুর রাজ্জাক বাবু সওদাগর সহ কর্মচারীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ জানালে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো দা ছুরি নিয়ে আসামীরা এগিয়ে আসলে জীবন রক্ষার্থে আমরা স্থান ত্যাগ করি। এসময় কর্তনকৃত গাছগুলো তারা পিকআপ যোগে নিয়ে যায়। রাবার বাগানের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আরো জানান, ৩০ ডিসেম্বর বুধবার ভোরে ফাল্গুনী লেটেক্সের এ বাগান থেকে ডজনাধিক রাবার গাছ কেটে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এসব কাজ পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বর্ণিত আসামীরাই করতে পারে বলে জানান তিনি। বারে বারে একই ঘটনা করে আসামীরা বাগান মালিকের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি করে যাচ্ছে এবং তাদের হুমকিধামকিতে চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন কর্মচারীরা। অভিযুক্ত পক্ষের বক্তব্যে নিকটস্থ এলাকায় তাদের পরিত্যক্ত বসতঘরও ভাঙচুর করে ঘরের গাছ নিয়ে গেছে বলে জানায়।
এ বিষয়ে লামা থানার ওসি তদন্ত শিবেন বিশ্বাস বলেন, ফাঁসিয়াখালী জলপাইতলী এলাকায় রাবার গাছ কাটার পূর্বের ঘটনায় দায়েরকৃত অভিযোগের তদন্তরত কর্মকর্তা বদলী হয়েছে। বিষয়টি দেখে এ ঘটনার দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
লামায় রাবার বাগান থেকে প্রতিনিয়ত গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা
