আব্দুস সালাম,টেকনাফ (কক্সবাজার):
কক্সবাজারের টেকনাফে ১২ থেকে ১৮বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে।টেকনাফসহ জেলার নয়টি উপজেলার ২লাখ ৯০হাজার স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
আজ শনিবার উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষ ও টেকনাফ মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে দুইটি অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে উপজেলার শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
এ তথ্যটি টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল।
তিনি জানান,আজ শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচী উদ্ধোধন করা হয়েছে।এসময় উপস্থিত ছিলেন-উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা(ইউএনও)পারভেজ চৌধুরী, টেকনাফ ২বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার,মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দময় ভৌমিক, একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুল আবসার,স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা চিকিৎসক এনামুল হক, মেডিকেল কর্মকর্তা ও রোগ নিয়ন্ত্রক চিকিৎসক প্রণয় রুদ্র।টেকনাফে আজ সুশৃঙ্খলভাবে শিক্ষার্থীদের মাঝে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।এ টিকা আগামী ১৬ই জানুয়ারী পর্যন্ত দেওয়া হবে।
টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম বলেন,কোভিড-১৯ এর প্রথমবার টিকা নিতে এসে ভয় লাগলেও টিকা নেওয়ার সময় কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করায় আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানায়।
আরেকজন এজাহার সরকারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী ইসমা হানান বলেন,জীবনের প্রথমবার করোনা ভাইরাসের টিকা দিতে পেরে খুবই ভাল লাগছে।
বায়তুস শরফ রিয়াজুল জন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ রাশেল বলেন, কোনোধরনের ঝমেলা ছাড়া সকালে এসে টিকা দিতে পারলাম।
তিনি আরও বলেন,শিক্ষার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত হওয়া সাপেক্ষে আগামী সপ্তাহ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে।তবে এ ক্ষেত্রে টিকা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত থাকার নিদেশনার আলোকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ স্থাপন করে আশপাশের সব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ওই কক্ষ থেকে টিকা দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা একডেমিক সুপারভাইজার নুরুল আবসার বলেন,শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে প্রত্যেক ইউনিয়নের একটি করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ স্থাপনের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আনলে সেটি বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা নিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলায় ২৯টি মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা ১৯টিসহ ৪৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্টান রযেছে।এরমধ্যে মাদ্রাসায় ১০হাজার ৬৪৭ ও বিদ্যালয়ে ২১হাজার ৯৩৬জনসহ মিলে ৩২ হাজার ৫৮৩জন শিক্ষার্থী রযেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দময় ভৌমিক জানান,টিকা কার্যক্রমের মূল সমস্যা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষসংকট।তবে শিক্ষাথীরা দীঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা গ্রহণ করেছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল বলেন, টেকনাফ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নের আজ শনিবার ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীর পাশাপাশি সিনোফার্মার(প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের)উপজেলা পরিষদে ৩হাজার ৭৭৭ ও টেকনাফ মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে ২হাজার ৮০৫জনসহ ৬হাজার ৫৮২জনকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে।এরমধ্যে একজন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীও রয়েছেন।তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে একটি হুইল চেয়ার প্রদান করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজারের সিভিল সাজন মাহবুবুর রহমান বলেন,আজ শনিবার সকাল থেকে এক যোগে জেলার প্রত্যেকটি উপজেলার ১২-১৮বছর বয়সী স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু করা হযেছে।জেলায় ২লাখ ৯০হাজার শিক্ষার্থীকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।