জালাল আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সুপার ইউনিট হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বহুল প্রত্যাশিত সম্মেলন আজ ৩ ডিসেম্বর(২০২২) বিকেল তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যে সম্মেলনের জন্য নান্দনিক মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মতোই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক কারা হবেন তা নির্ধারণ করবে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে পদপ্রত্যাশী দুই শতাধিক নেতাকর্মী দফতর সেলের কাছে জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন ।
অতীতে কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক আবিদ আল হাসান কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির উপ -আইন বিষয়ক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার নজির থাকায় এবারের সম্মেলনেও অনেক কেন্দ্রীয় নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ পেতে জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। কয়েকজন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টাকার বিনিময়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য নিজেদের ইচ্ছামত হল এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে পদ পাওয়ার যোগ্য নয় এমন কর্মীদের কে কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদে পদায়ন করেছেন। তাই রাজনৈতিক মান- সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে আমাদের। তার চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এবং সাধারণ অনেক বেশি রাজনৈতিক গুরুত্ব ও মর্যাদা বহন করে।

এর বাইরেও “সাংগঠনিক প্রমোশন” হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ পেতে বিভিন্ন হলের সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি তাদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অমর একুশে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হাসান সোহাগ, সভাপতি মোঃ ইনায়েত হোসেন মনন, ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাজল দাস, সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মন, হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হল ছাত্রলীগের সভাপতি শহীদুল হক শিশির সহ বিভিন্ন হলের একঝাঁক সভাপতি এবং সাধারণ তাদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির অনেকেই ঢাবি শাখার শীর্ষ পদ পেতে তাদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বিগত সোহাগ -জাকির কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ইয়াসির আরাফাত তূর্য , ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানজিন এ আলামিন,
স্কুল ছাত্র বিষয়ক উপ সম্পাদক এবং বিজয় একাত্তর হলের সাবেক সহ-সভাপতি এস এম জানে আলম জনি,ঢাবি ছাত্রলীগের উপ প্রচার সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী।
বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান খোকন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।

পদ প্রত্যাশীদের বক্তব্য ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে স্কুল থেকে কলেজ,হল , বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এবং ওয়ার্ড থেকে উপজেলা, জেলা কিংবা মহানগর পর্যায়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন নেতাদের দায়িত্ব দিতে হবে।

অনেকেই আবার কেন্দ্রীয় কমিটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা উভয় কমিটির যে কোন একটি কমিটিতে শীর্ষ পদ পেতে তাদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সভাপতি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
তিনি জানান, “প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং রুপপ্রকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের জন্য বিজ্ঞান চেতনার দক্ষ ও তরুণ নেতৃত্ব দরকার।যাতে সরকারের অর্জন গুলো সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।
বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শে অটল এবং দেশরত্ন শেখ হাসিনার যে কোন সিদ্ধান্তের প্রতি অবিচল থেকে স্বাধীনতা বিরোধী মৌলবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে নিজের বুকের তাজা রক্ত বিসর্জন দিয়ে হলেও রাজপথে সোচ্চার থাকবে সেরকম নেতৃত্ব আসুক। তাই আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজপথের পরীক্ষিত নেতাদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিবেন বলে আমি প্রত্যাশা করি”।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ প্রচার সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ বলেন, “বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আপসহীন, ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনার চলার পথকে মসৃণ রাখতে শ্রম-ঘাম-মেধা দিয়ে যারা রাজপথে সরব ছিলো,যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনুভূতিকে মূল্যায়ন করে চলতে পারে,তারাই নেতৃত্বে আসুক”।

উল্লেখ্য,সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়েছিল ২০১৮ সালের ১০ মে।