সিবিএন ডেস্ক: তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০১৯’ দেয়ার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশে কর্মরত তামাক বিরোধী ২৯টি সংগঠন। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার যে ঘোষণা দিয়েছেন এটা তার সাথে সাংঘর্ষিক। একইসঙ্গে যেভাবে তড়িঘড়ি করে হঠকারি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জাকর। তাই অবিলম্বে নিজেদের ভুল স্বীকার করে প্রদত্ত পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ শুক্রবার (০৫.১১.২০২১) তামাক বিরোধী ২৯টি সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তারা এ বিষয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার প্রদান নীতিমালা ২০২০ এ তামাক বা তামাক জাতীয় পণ্যভিত্তিক বা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোন পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কারের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়কে তামাক বিরোধী সংগঠনসমূহের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলাম। কিন্তু যে বিবেচনায় এই নীতিমালায় তামাক কোম্পানিকে পুরস্কারের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে সেই একই বিবেচনায় ২০১৯ সালের রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কারের জন্য তামাক কোম্পানিকে বিবেচনা না করলে তা হতো জনস্বার্থের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য বিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত। ফলে তামাক কোম্পানিকে এই পুরস্কার প্রদান সুস্পষ্টভাবে পুরস্কার প্রদান নীতিমালার নৈতিক অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’
তারা আরো বলেন, ‘তামাক কোম্পানিগুলো এমন একটি পণ্যের বাণিজ্য করে যা মানুষকে মৃত্যুর পথে নিয়ে যায়। দেশে তামাক সেবনজনিত রোগে প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ্য ৬১ হাজার লোক মারা যায় এবং চিকিৎসা ব্যায় ও উৎপাদনশীলতা হারানোর কারণে বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকারও অধিক অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। এই পুরস্কার প্রদান তামাক কোম্পানিকে তাদের ব্যবসা প্রসারে উৎসাহিত করবে যা দেশের জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপর মারাত্বক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
তামাক কোম্পানিকে পুরস্কার প্রদানের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতির নামে যে শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার তা তামাক কোম্পানির মত মৃত্যুর বাণিজ্যকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে যাওয়া জনস্বার্থ বিবেচনায় যারপরনাই অনুচিত। এই পুরস্কার এমন শিল্প প্রতিষ্ঠানের পাওয়া উচিত যারা জনকল্যাণকর শিল্প উন্নয়নে অবদান রাখছে। তাই তামাক কোম্পানিকে প্রদত্ত পুরস্কার বাতিল করে জনকল্যাণকর শিল্প উন্নয়নে অবদান রাখছে এমন আরেকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কার প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।’
সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ জানানো ২৯টি সংগঠন হলো, এইড ফাউন্ডেশন, আর্ক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা), বিসিসিপি, বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি), বৃত্ত ফাউন্ডেশন, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), সিএলপিএ ট্রাস্ট, ডেভেলপমেন্ট অ্যাকটিভিটিজ অব সোসাইটি (ডাস), ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ফর রুরাল পুওর, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস), নাটাব, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠন, প্রজ্ঞা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, সুশাসনের জন্য প্রচারাভিজান (সুপ্র), তামাকবিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ), টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল, উবিনীগ, উন্নয়ন সমুন্নয়, ভয়েস, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট ও ইপসা।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।