নুরুল আলম সাঈদ , নাইক্ষ্যংছড়ি:
সিলেটে আতিয়া মহলে জঙ্গি হামলায় গ্রেফতারকৃত বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীর জহুরুল হক ওরফে জসিম (২৯), মো. হাসান (২৮) ও জহরুল হক ওরফে জসিমের স্ত্রী আর্জিনা ওরফে রাজিয়া সুলতানা (২১) কে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের মামলায় তিন জেএমবি সদস্যকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুর ২ টায় সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমীন বিপ্লব এই রায় দেন।
বেকসুর খালাসপ্রাপ্তরা হচ্ছেন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের জহুরুল হক ওরফে জসিম (২৯), মো. হাসান (২৮) ও জহরুল হক ওরফে জসিমের স্ত্রী আর্জিনা ওরফে রাজিয়া সুলতানা (২১)।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ ভোরে আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের সময় এই আসামিরা অন্য একটি মামলায় চট্টগ্রাম কারাগারে কারান্তরীণ ছিলেন। এছাড়া এ ঘটনায় সাথে জড়িত সব জঙ্গি ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। তাই সাক্ষ্য প্রমাণে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামিদের খালাস দেন বিচারক।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ দিবাগত রাত থেকে আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু হয়। অভিযানে র্যাব, পুলিশ, পুলিশের বিশেষ ক্রাইম রেসপন্স টিম (সিআরটি), সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল অংশ নিয়েছিল। সেনাবাহিনীর পরিচালিত ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ শেষে ভবনের ভেতর থেকে এক নারীসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অপারেশন শেষ হওয়ার আগে অভিযান চলাকালে আতিয়া মহল থেকে কিছু দূরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের তৎকালীন প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, দুই পুলিশ সদস্যসহ সাতজন নিহত হয়েছিলেন।
আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শেষে তিনটি মামলা হয়েছিল। মামলার প্রথম দিকে পুলিশ তদন্ত করলেও পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্তভার নেয়। ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়েরকৃত মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে পিবিআই। অভিযোগপত্রে তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
পরে ওই বছরই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পৃথক জঙ্গিবিরোধী অভিযানে জহুরুল ও তার স্ত্রী আর্জিনা এবং কুমিল্লার চান্দিনা থেকে মো. হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তাদেরকে আতিয়া মহলের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
অন্যদিকে বোমা বিস্ফোরণ ও হত্যার ঘটনায় হওয়া দুটি মামলায় ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। প্রতিবেদনে মামলা নিষ্পত্তির আবেদন করা হয়েছিল।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।