ঢাকােপাস্ট:
দীর্ঘ নয় মাস পর বাংলাদেশী যুবক আব্দুস সালামের মরদেহ ফেরত দিল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ। আইনী প্রক্রিয়া শেষে শনিবার (২০ মে) সন্ধ্যার দিকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের জিরোপয়েন্টে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) কাছে সালামের মরদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ। এ সময় নিহতের পরিবার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ উপস্থিত ছিল।
পরে রাতে সালামের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গেলে তাকে এক নজর দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসে আত্মীয়-স্বজন। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। পরবর্তীতে রাতে জানাজার পর তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট ভোরে নীলফামারী-৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা সীমান্তের বিপরীতে ভারতের বড়ুয়াপাড়া সীমান্ত এলাকায় সালামসহ তিন যুবককে ধাওয়া করেন স্থানীয়রা। সে ধাওয়ায় দুজন পালিয়ে যেতে পারলেও গরু চোর সন্দেহে সেখানকার স্থানীয়রা সালামকে পিটিয়ে হত্যা করেন। পরে সেখান থেকে সালামের মরদেহ উদ্ধার করে বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশ। ঘটনাটি ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হলে বিষয়টি জানতে পারেন সালামের পরিবারের সদস্যরা। পরে বিজিবির মাধ্যমে সালামের মরদেহ ফেরত চেয়ে আবেদন করলে সীমান্ত আইনী জটিলতা ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ভারতে গিয়ে নিহতের ভাই মরদেহ ফেরত নিয়ে আসেন।
সালামের বড় ভাই আলিম উদ্দীন বলেন, গত বছর আগস্টে আমার ভাইয়ের খোঁজ পাচ্ছিলাম না। পরে জানতে পারি ভারতে তাকে গরু চোর সন্দেহে হত্যা করা হয়েছে। পরে বিজিবির মাধ্যমে ভাইয়ের মরদেহ ফেরতে আনার জন্য আবেদন করি। তখন থেকেই ৯ মাস ধরে ভাইয়ের মরদেহ ফেরত আনতে বিজিবিসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেছি। দীর্ঘদিন পর হলেও স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় আমার ভাইয়ের মরদেহু ফেরত পেয়েছি। রাতেই তাকে দাফন করা হয়েছে।
সাতমেড়া ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বলেন, নিহত সালামের মরদেহ ভারতের জলপাইগুড়ি হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থায় ( ফ্রিজিং করে) রাখা ছিল। পরে ভিসা পাসপোর্টের মাধ্যমে নিহত সালামের মেজ ভাই আলিম উদ্দীন ভারতে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে দীর্ঘ ৯ মাস পর বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশ বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশনে পরিবারের সদস্যদের কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করে।
পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস পর শনিবার নিখোঁজ আব্দুস সালামের মরদেহ ফেরত পায় তার পরিবার। মরদেহ হস্তান্তরের সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুলিশও ছিল। রাতেই তাকে দাফন করা হয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।