অনলাইন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নৌকা সারাজীবন উজান ঠেলে ঠেলেই এগিয়ে গেছে।ঝড়-ঝঞ্ঝা পাড়ি দিয়েই নৌকা আজকে তীরে ঠেকে জনগণের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। নৌকা মার্কা স্বাধীনতা দিয়েছে, নৌকা মার্কা অর্থনৈতিক উন্নতি দিয়েছি, নৌকা মার্কা ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়েছে। নৌকা মার্কাই স্মার্ট বাংলাদেশ দেবে।

শনিবার বিকাল ৫টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁও শেরেবাংলা নগরে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কাজ একটাই। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। যে অন্ধকার যুগ ছিল, সে অন্ধকার যুগ থেকে বাংলাদেশের মানুষকে আলোর পথে যাত্রা শুরু করা। আমরা যে ওয়াদা দিয়েছি, একে একে সেই ওয়াদা আমি পূরণ করেছি। সে কারণেই কবি সুকান্তের ভাষায় বলতে চাই, ‘যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল, এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি- নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’

তিনি বলেন, প্রতিটি সেক্টরে এই ১৫ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, আজকে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। আজকে বিশ্ব তাকিয়ে থাকে অবাক হয়ে। আমাদের তো সীমিত সম্পদ, কিন্তু জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতাকে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা জিজ্ঞাসা করেছিল- আপনার দেশে তো কোনো সম্পদ নাই, আপনি দেশ কি দিয়ে গড়বেন। জাতির পিতা বলেছিলেন- আমার মাটি আছে, আমার মানুষ আছে, আমার মাটিতে সোনা ফলে, আমার সোনার মানুষ আছে তাই দিয়ে আমি দেশ গড়ব’। আমরা তাই দিয়ে দেশ গড়ে যাচ্ছি।

রাজধানীর সঙ্গে সারা বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে দেশের মানুষকে ‘আরেকটি নতুন উপহার দিয়ে গেলেন’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ ঢাকা এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হতে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন কিছুক্ষণ আগেই আমি করেছি। এটা আপনাদের উপহার হিসেবে দিয়ে গেলাম।’

দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস-খুন-গুম-হত্যা অনেক কিছুই আমরা দেখেছি। সেগুলোর উত্তরণ ঘটিয়ে বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর বিমানবন্দরের পাশে কাওলা টোল প্লাজায় টোল দিয়ে বহুল প্রত্যাশিত স্থাপনা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফলক উন্মোচন মঞ্চে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। বোতাম চেপে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসেওয়ের উদ্বোধন করেন তিনি।

এ সময় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেতু সচিব মো. মনজুর হোসেন এবং ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএমএস আকতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রীকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে ব্রিফ করেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এরপর ছোটবোন শেখ রেহানসহ গাড়িবহর নিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চড়ে আগারগাঁওয়ে সমাবেশের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তার গাড়িবহরে ২৫টি গাড়ি ছিল। গাড়িবহরের সবগুলো গাড়ির টোল পরিশোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি ২০০০ টাকা দেন। দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা প্রান্ত থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সফর করেন তিনি। ১৬ মিনিট পর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফার্মগেট প্রান্তে নামেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর বিকাল ৪টার দিকে আগারগাঁওয়ের সুধী সমাবেশের মঞ্চে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা। অনুষ্ঠানস্থলে তাদের স্বাগত জানান সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
– যুগান্তর