কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে নাশকতায় আন্তঃনগর ট্রেন বিজয় এক্সপ্রেসের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে বলে দাবি করেছেন রেলমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিম।
তিনি বলেছেন, টাকার বিনিময়ে এক ব্যক্তি রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে। ওই ব্যক্তি ধাওয়া খেয়ে ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায়। ব্যাগে তার পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। বিএনপি ও জামায়াত এ জাতীয় কাজ করে।
সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
রেলমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম বলেছেন, মানুষ হত্যা করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটা যায় না। টাকার বিনিময়ে রেল কেটে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। ক্ষমতায় যেতে হলে মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, রোববার রেলের ৯ টি বগি লাইনচ্যুত হইছে। যে ব্যক্তি ফিস প্লেট খুলছিল তাকে ধাওয়া দিলে ব্যাগ ফেলে পালিয়ে গেছে। তার আইডি কার্ডসহ কাগজ পত্র পাওয়া গেছে। সে মূলত কিছু টাকার বিনিময়ে এই কাজ করছে। আগুন সন্ত্রাসী বিএনপি ও বিএনপি সমর্থনকারী জামাত এই কাজগুলো করে। এগুলো করে তারা জনসমর্থন পাচ্ছে না। বরং আস্তে আস্তে জনগণ থেকে দূরে সরে গেছে। তারা জানে মানুষ তাদের ভোট দেবে না। সে জন্যই এই সব অপকর্ম করছে। রাজনীতি করার পূর্বশর্ত দেশকে ভালোবাসতে হবে।
তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের সঙ্গে অতিরিক্ত বগির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে অধিকাংশ যাত্রী বহন করা যায় সে ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।
রেলমন্ত্রী আরও বলেন, টিকিট ছাড়ার ২/৩ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত টিকিট শেষ হয়ে যায়। কোন কোন নাম্বার থেকে টিকিট কেনা হয় প্রত্যেক দিন তার তালিকা নেয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে সঙ্গে কাউন্টার থেকে টিকিট দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রোববার (১৭ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের তেজের বাজার এলাকায় এ বগি লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে।
১৮টি বগিতে কয়েকশ যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুর যাচ্ছিল ট্রেনটি। হাসানপুর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে নাঙ্গলকোটের আগে চলন্ত ট্রেনটি বগিগুলো লাইনচ্যুত হয়ে এবড়ো-থেবড়ো হয়ে যায়। এসময় রেললাইনের ধারে একটি বাড়িতে উঠে যায় বগি। তবে সেসময় ঘরে কেউ ছিলেন না।
স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, এই দুর্ঘটনার মূল কারণ হচ্ছে ব্রিজ। এই ব্রিজের যে কাঠ, এই কাঠ অনেক বছরের পুরোনো। এই ব্রিজের কোনো সংস্কার হয়নি। দুর্ঘটনায় চালকদেরও অবহেলা রয়েছে। ট্রেনটি যে গতিতে এসেছে তা স্বাভাবিক গতি ছিল না। এই লাইনে একটা গতিসীমা আছে, এই গতিসীমা মানা হয়নি।
কর্তৃপক্ষের দাবি, অতিরিক্ত তাপে লাইন বেঁকে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সামনেই স্টেশন থাকায় ট্রেনের অতিরিক্ত গতিও ছিল না।
চট্টগ্রাম বিভাগ রেলওয়ের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, তাপের কারণে রেললাইন বেঁকে গিয়েছিল, যা আমরা খেয়াল করি নাই। তাপে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ৯ বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। আজ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক নাও হতে পারে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত উদ্ধারের।
গত দুই বছরে রেলপথে মোট ১৭০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় মোট ৪৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে।