চট্টগ্রাম থেকে ১৪৬ জন যাত্রী নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির উদ্দেশ্যে যাওয়া বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এয়ারক্রাফটের জানালায়(উইন্ডশিল্ড) ফাটল দেখা দিয়েছে।

সোমবার রাতে ফ্লািইটটি(বিজি-১২৭) আবুধাবির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পাইলট উইন্ডশিল্ডে ফাটল দেখে মধ্যরাতে সেটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করান।

এর আগে বিমানটি নরসিংদীর আকাশে অন্তত তিন ঘণ্টা ধরে চক্কর দেয়। এতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একই জায়গায় একটি বিমান চক্কর দেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দেয়। লোকজন এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে ঘটনা জানতে চান।

উইন্ডশিন্ডে ফাটল দেখা দেওয়া এয়ারক্রাফটটি বোয়িংয়ের তৈরি ৭৩৭ মডেলের। এর আগেও বিমানের বহরে থাকা বোয়িংয়ের অত্যাধুনিক ড্রিমলাইনারের উইন্ডশিল্ডের ফাটল দেখা দিয়েছিল। এ নিয়ে চার দফায় আকাশে বিমানের উড়োজাহাজের উইন্ডশিল্ডে ফাটল ধরা পড়ে। এর মধ্যে দুই দফায় বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার, একবার বোয়িং ৭৩৭-এর সাইড গ্লাসে ফাটল এবং সর্বশেষ সোমবার রাতে ৭৩৭-এ উইন্ডশিল্ডে ফাটল দেখা দিল।

চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের স্টেশন ম্যানেজার মো. সলিমুল্লাহ কালবেলাকে বলেন, ফ্লাইটটি (বিজি-১২৭) রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে আবুধাবির উদ্দেশে উড়াল দেয়। সেখানে বিজনেস ক্লাসে ১৩ জন ও ইকোনমি ক্লাসে ১৩৩ জনসহ মোট ১৪৬ যাত্রী ছিলেন।

বিমান চলাচল পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ‘ফ্লাইট রাডারের’ তথ্য মতে, ফ্লাইটটি রাত ১০টা ৪ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে আবুধাবির উদ্দেশে উড়াল দেয়। ত্রুটির কারণে নরসিংদীর বেলাবো এলাকার আকাশে প্রায় ২৬ থেকে ২৭টি চক্কর দেয়।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, এয়ারক্রাফটির উইন্ডশিল্ডে ফাটল দেখা দেওয়ায় এটি তাৎক্ষণিক অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন পাইলট। এজন্য নিয়ম অনুযায়ী ফ্লাইটটি আকাশে চক্কর দিয়ে জ্বালানি পোড়াতে থাকে। বিষয়টি যাত্রীদের অবগত করা হয়। শাহজালাল বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ার থেকে ফ্লাইটটিকে নরসিংদীর আকাশে চক্কর দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ততক্ষণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে রাখে। তবে রাত ১টা ২৫ মিনিটে ফ্লাইটটি নিরাপদে অবতরণ করানো হয়।

নরসিংদীর বেলাবো থানার ওসি আজিজুর রহমান জানান, রাতে একটি উড়োজাহাজ আকাশে চক্কর দিচ্ছিল বারবার। তখন লোকজন থানায় ফোন দিয়ে ঘটনা জানতে চেয়েছিল। অবশ্য পরে সেটি আর দেখা যায়নি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এআরবিও কায়সার জামান বলেন, এটি বড় কোনো ঘটনা নয়। ফ্লাইটটি ওড়ার পর পাইলট উইন্ডশিল্ডে সামান্য ফাটল দেখতে পান। তখন সেটি অধিকতর নিরাপত্তা বিবেচনায় অবতরণের সিদ্ধান্ত হয় এবং সেটি নিরাপদে অবতরণ করে। বিষয়টি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংকে জানানো হয়েছে। তারা ক্ষতিগ্রস্ত কাচ পরীক্ষার জন্য পাঠাতে বলেছে। তিনি জানান, ক্ষতি হওয়া উইন্ডশিল্ডটি রাতেই বদলে দেওয়া হয়েছে এবং ওই উড়োজাহাজটি অপারেশনে রয়েছে। তা ছাড়া যাত্রীদেরও ওই রাতেই অন্য একটি ফ্লাইটে আবুধাবি পাঠানো হয়।