মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
কক্সবাজার জেলা বিচার বিভাগের জন্য আরো ৪ জন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এর পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী অতিরিক্ত জেলা ও জজ এর এ পদগুলো অনুমোদন দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কক্সবাজার বিচার বিভাগের জন্য নতুন সৃজন করা বিচারকদের পদায়ন করা হবে।

কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির দোয়া ও ইফতার মাহফিল এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কক্সবাজার বিচার বিভাগ প্রায় এক লক্ষ মামলার ভারে জর্জরিত। সে তুলনায় বিচারকের সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। মামলার আধিক্যের কথা চিন্তা করে কক্সবাজার জজশীপে নতুন করে আরো ৪ জন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এর পদ সৃষ্টি করায় প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, আইন সচিব সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তিনি কৃতজ্ঞতা জানান। জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আরো বলেন, নতুন সৃজিত ৪ জন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এর আদালত চালু হলে এখানকার মামলার জট কিছুটা হলেও কমবে।

আইনজীবীদের পেশাগত মানোন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপ করে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল দ্রুততম সময়ে মামলা নিষ্পত্তিতে আইনজীবীদের সহযোগিতা কামনা করেন।

কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট ইকবালুর রশিদ আমিন সোহেল এর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন-আইনজীবী সমিতি ভবন মসজিদের ইমাম মাওলানা নুরুল হক।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন-কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হক। তিনি রমজানের তাৎপর্যের উপর আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, খোদাভীতি অর্জনের জন্য রমজান মাসের রোজাকে ফরজ করা হয়েছে। তাই জীবনের সর্বক্ষেত্রে খোদাভীতি অর্থাৎ তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমেই রোজার সফলতা আসতে পারে। অনুষ্ঠানের শেষে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হক দেশ, জাতির সার্বিক কল্যান কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন।

ইফতার মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এর সদস্য এডভোকেট মুজিবুল হক। ইফতার মাহফিল এ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন, ট্রাইব্যুনাল-২ বিচারক (জেলা জজ) মশিউর রহমান, ট্রাইব্যুনাল-৩ বিচারক (জেলা জজ) মোঃ আবদুর রহিম, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মোহাম্মদ ফারুকী, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মাহমুদুল হাসান, সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আবুল মনসুর ছিদ্দিকী, সিনিয়র সহকারী জজ সুশান্ত প্রসাদ চাকমা, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ সাজ্জাতুন নেছা লিপি, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চজ্ঞাঁ, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো: আসিফ, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: সোয়েব উদ্দিন খাঁন, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হামিমুন তানজিন, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদ, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম, টেকনাফের সহকারী জজ মো: ওমর ফারুক, রামু’র সহকারী জজ মো: মাজেদ হোসাইন, মহেশখালীর সহকারী জজ আবদুল মান্নান সহ জেলা জজশীপ ও ম্যাজিস্ট্রেসীতে কর্মরত বিচারকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আইনজীবীদের মধ্যে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, জিপি এডভোকেট মোহাম্মদ ইসহাক, পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম, আইনজীবী সমিতির সদ্য বিদায়ী সভাপতি এডভোকেট আবুল কালাম ছিদ্দিকী, সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জিয়া উদ্দিন আহমদ সহ প্রচুর আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজার জজশীপে বর্তমানে শুধুমাত্র একজন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এর পদ রয়েছে। নতুন সৃজনকৃত ৪ জন জন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদায়ন করা হলে কক্সবাজার বিচার বিভাগে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এর সংখ্যা হবে মোট ৫ জন।