সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
কক্সবাজার জেলার সুপরিকল্পিত অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ঝুঁকি-সংবেদনশীল ভূমি-ব্যবহার পরিকল্পনা তৈরির লক্ষ্যে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের Tomorrow’s Cities শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের প্রথম ধাপের একটি ওয়ার্কশপে ৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্মিলিত ভাবে অংশগ্রহণ করেছে।
ওয়ার্কশপটি কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নে অবস্থিত ইনানী রয়াল রিসোর্ট-এ অনুষ্ঠিত হয়। ওয়ার্কশপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর মোহাম্মদ নুরুল আবছার।
উপস্থিত ছিলেন Tomorrow’s Cities শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট দলের সদস্য ড. রামেশ গুরাগাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিজাস্টার সায়েন্স এন্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো: জিল্লুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: বশির জিসান এবং Tomorrow’s Cities শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের ১ম পর্যায়ের দলনেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: মনিরুজ্জামান খান।
উক্ত ওয়ার্কশপে আরো উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং উখিয়া উপজেলার জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজন।
পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত পর্যটন নগরী কক্সবাজার ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে বহুল পরিচিতি লাভ করেছে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। যেহেতু এই অঞ্চলের ভূ-প্রাকৃতিক পরিবেশ পর্যটনশিল্প বিকাশের জন্য অপরিহার্য তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুণ রেখে ভূমির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এছাড়াও কক্সবাজারের ভৌগোলিক অবস্থান ও আবহাওয়ার কারণে এ অঞ্চল বন্যা, ঘূর্নিঝড়, সামুদ্রিক জলোচ্ছাস ও পাহাড় ধ্বস সহ নানাবিধ আপদে ঝুঁকিপূর্ণ। অবস্থানগত কারণে ভুমিকম্প এই অঞ্চলের জন্য বড় আপদ হিসেবে দেখা দিতে পারে।
কক্সবাজার জেলার ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় উখিয়া উপজেলা একটি দূর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত পাহাড় সমেত এই ভূখন্ডে পাহাড়ী ঢলে আকষ্মিক বন্যা, জলাবদ্ধতা, ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি অন্যতম প্রাকৃতিক দূর্যোগ যা এতদ্বাঞ্চলের মানুষের জান-মালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে থাকে। একারণে Tomorrow’s Cities প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য উখিয়া উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নকে প্রকল্প এলাকা হিসেবে নির্ধারন করা হয়েছে। উক্ত এলাকার জন্য একটি ঝুঁকি-সংবেদনশীল ভূমি-ব্যবহার পরিকল্পনা তৈরির কাজটি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় চলমান “কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন” শীর্ষক প্রকল্পে সহযোগী ও দিকনির্দেশক ভূমিকা রাখবে।
“কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন” শীর্ষক প্রকল্পটি সরকার এবং জনগণ উভয়ের আকাঙ্খা পূরণ করবে। এটি অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হবে এবং মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময় বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সম্ভাব্য দ্বন্দ্ব হ্রাস করবে। এই মহাপরিকল্পনা কেবল ভূমি ব্যবহার, জল ও স্থল এলাকা, উচ্চতা সীমাবদ্ধকরণ এবং জমির প্লটের জন্য বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা প্রণয়নের পাশাপাশি মেগা প্রকল্প সমূহ, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (অর্থবছর ২০২০-২০২৫), রূপকল্প-২০৪১, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা, এসডিজি, সুনীল অর্থনীতি, দুর্যোগ ইত্যাদি বিষয়ের সমন্বয় নিশ্চিত করবে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় চলমান “কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন” শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলাধীন সকল উপজেলা এবং সমুদ্র সৈকত এলাকার সেক্টোরাল প্ল্যানের মধ্যে অন্যতম দুইটি পরিকল্পনা হলো ঝুঁকি সংবেদনশীল ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা। গত ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখের ওয়ার্কশপটিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ঝুঁকি-সংবেদনশীল ভূমি-ব্যবহার পরিকল্পনা তৈরিতে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দলের পাশাপাশি এই অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি এবং সকল অংশীজন হতে এ বিষয়ক পরামর্শ গ্রহণ করে। এর মাধ্যমে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জনবান্ধব মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন, আত্মনির্ভরশীল স্মার্ট কক্সবাজার তথা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ নির্মাণের পথে আবদান রাখতে সক্ষম হবে।