ডেস্ক নিউজ:

কক্সবাজার সদরের মুহুরীপাড়ায়  পুত্রবধূ এবং নাতির মারধরে গুরুতর আহত হয়েছে বৃদ্ধা শ্বাশুড়ি। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়ায় এঘটনা ঘটে। পরে জাতীয় জরুরী সেবা (৯৯৯) এর নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ আহত ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে এবং কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন।

জানা যায়, জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরুধের জের ধরে গত কয়েকদিন আগে ঘটনার সূত্রপাত হয়। আহত বৃদ্ধা নুর জাহান (৬৫) ও তার স্বামী শামসুল আলম (৭০) দীর্ঘদিন যাবত ওই এলাকায় এক খন্ড খাস জমি ক্রয় করে ঘর করে বসবাস করে আসছেন। গত কয়েকদিন আগে তার পুত্রবধূ শফিকা বেগম (৩৫) ওই জমির মালিকানা দাবী করে কাগজপত্র বুঝিয়ে দিতে চাপ দেন শ্বাশুড়িকে। এসময় বৃদ্ধা শ্বাশুড়ী নুর জাহান তার রোহিঙ্গা পুত্রবধূর দাবীকৃত ওই জমির কাগজপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে পরিকল্পিত ভাবে শুক্রবার সন্ধ্যায় শফিকা বেগম ও তার ছেলে ফরহাদুল ইসলামের নেতৃত্বে অজ্ঞাত ৪/৫ জন স্বসস্ত্র ভাড়াটে সন্ত্রাসীকে সাথে নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বৃদ্ধা নুর জাহান গুরুতর আহত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আহত বৃদ্ধার ছেলে শাহ আলম প্রবাসে আছেন। হামলাকারীরা হলেন তারই স্ত্রী এবং পুত্র। শফিকা বেগম একজন রোহিঙ্গা নারী। তিনি বিভিন্ন কলা কৌশলে আহত বৃদ্ধার ছেলে শাহ আলমকে বিয়ে করেছিলেন। এরপর থেকেই মূলত বৃদ্ধার ক্রয়কৃত ওই জমিটির উপর তার লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। এর আগেও একাধিকবার বসতঘর সহ জমিটি কেড়ে নিতে অপতৎপরতা চালিয়ে ছিলো রোহিঙ্গা বধূ শফিকা বেগম। গত ২/৩ দিন আগেও শফিকা বেগম তার এক মেয়েকে (২০) সাথে নিয়ে ঘরটির একটি কক্ষ জোরপূর্বক দখল করে নেন। মেয়েটি বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও মেয়ের জামাই ফয়সালের যোগসাজসে এই দখল চেষ্টা চালাচ্ছেন। ফয়সাল একজন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী বলেও জানান তারা।

হামলায় আহত বৃদ্ধার ছেলে রফিক অভিযোগ করে জানান, তার ভাই শাহ আলমের স্ত্রী শফিকা বেগম এবং সন্তান ফরহাদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে বসতঘর সহ জমিটি অবৈধ ভাবে দখল করে নিতে চাইছেন। এমনকি বসতঘর সহ জমিটির কাগজ তাদের হাতে হস্তান্তর করতে চাপ দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে কাগজটি বুঝিয়ে না দিলে মা- ছেলের নেতৃত্বে একদল অজ্ঞাত লোকজন বাড়িতে প্রবেশ করে তার বৃদ্ধা মায়ের উপর হামলা চালায়। এসময় শফিকার দায়ের কোপে আহত হন তার বৃদ্ধা মা নুর জাহান।

ঘটনায় অভিযুক্ত ফরহাদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি শুরুতে এধরণের কোনো ঘটনাই ঘটেনি বলে দাবী করেন। পরে অধিকতর জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তিনি কিংবা তার মা শফিকা বেগম কেউই তার দাদীর উপর হামলা করেনি। জায়গা জমি থেকে বঞ্চিত করতে ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশ ডেকে তার দাদী নাটক সাজিয়েছে বলেও দাবী করেন।

এবিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সেলিম জানান- ঘটনার বিষয়ে এখনও কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।