বিশেষ প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজার-৩ (সদর, রামু ও ঈদগাঁও) আসনটি এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। টানা তিনবার একাধারে ক্ষমতা ভোগ করেছেন তিনি। দলীয় প্রতিযোগিতায় নৌকা জিতে এবার মাঠে লড়ছেন। কিন্তু এমপি কমলের বসতঘরে হানা দিচ্ছে ঈগল। ছোবল মারার অপেক্ষা। নানা সমীকরণে এটি বলছে। বিভিন্ন এলাকা থেকেও এমন আওয়াজ আসছে।
কক্সবাজার ৩ আসনের বর্তমান ভোটার ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬১০। যেখানে কক্সবাজার সদরে ২ লাখ ১৭ হাজার ১২২ জন, রামুতে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৫১ জন এবং ঈদগাঁওতে ৮৭ হাজার ৭৩৭ জন। এই আসনে ভোটকেন্দ্রের পরিমাণ ১৭৬ টি।
ভোটার মাঠে শুরুতে এই আসনটিতে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেন। শুরুতে একেবারে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। কিন্তু গত ২১ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতের আদেশে ঈগল প্রতীক নিয়ে এই আসনে মাঠে নামেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হাইকোর্টের বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ।
ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ মাঠে নামার পর বদলে গেছে ভোটের মাঠের দৃশ্যপট। টানা ১০ বছরের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ ভোটাররা একে একে প্রকাশ্যে হতে শুরু করে ঈগলের পক্ষে। জেলার শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতা, কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাইছারুল হক জুয়েল, ঈদগাঁও আওয়ামীলীগের সভাপতি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু তালেব, রামুর বীর মুক্তিযোদ্ধার মোজাফ্ফর আহমদ, রামু উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যাব রিয়াজুল আলম, রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মন্ডল, বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, কক্সবাজার পৌরসভার বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর ঈগলের পক্ষে প্রচারণা নামে। একই সঙ্গে ৩ টি উপজেলার ১০ জনের বেশি ইউপি চেয়ারম্যান প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে ঈগলকে।
এর জের ধরে নৌকা কর্মীদের হামলায় ঈগল প্রতীকের প্রচারণা গাড়ি ভাংচুর, মামলা, প্রার্থী নেতৃত্বে জোয়ারিয়ানালার চেয়ারম্যানকে মারধরের ঘটনা উল্টো ক্ষতির কারণ হয়েছে নৌকার। যে কারভে ঈগল প্রতীক শেষ মুহূর্তেই এগিয়ে গেছেন। বর্তমানে কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৬০ শতাংশ, রামুতে ৪৫ শতাংশ এবং ঈদগাঁওতে ৬৫ শতাংশ এগিয়ে রয়েছে ঈগল। ফলে ঈগলের হানায় নৌকার পরাজয় হবে বলে মনে করছেন অনেকেই।
প্রার্থী মিজান সাঈদ বলেছেন, মাঠ পর্যায়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে নেতৃত্ব পরিবর্তনের ভাবনা দেখতে পেয়েছেন। সাধারণ ভোটাররা ভালোবেসে এগিয়ে এসেছেন। সুষ্ঠু ভোট চাই। ফলাফল আমার পক্ষেই আসবে।
তবে জয়ের ব্যাপারে বরাবরের মতো আশাবাদি সাইমুম সরওয়ার কমল। তিনি বিজয় হবেন, জনগণ আরো একবার সুযোগ দিবেন, এমনটি মনে করছেন।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার-৩ আসনে আরো ৫ জন এমপি প্রার্থী রয়েছেন।
তারা হলেন, জাতীয় পার্টির এডভোকেট মোহাম্মদ তারেক (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন (হাতঘড়ি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) শামীম আহসান ভুলু (কুড়েঁঘর) ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) মোহাম্মদ ইব্রাহিম (টেলিভিশন)।
৭ জানুয়ারি নির্বাচন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।