চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

সারাদেশে দলীয় কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য জেলা ও মহানগরে সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সম্মেলনের জন্য ৩০ মে তারিখ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। সেই লক্ষ্যে কাজও শুরু করেছেন নেতারা। প্রায় ৯ বছর আগে ৯০ দিনের জন্য নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১০১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদসহ কমিটির একাধিক সদস্য এখন যুবলীগে থাকতে চান না। তারা সকলে নগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদপ্রত্যাশী।

এদিকে মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর বসে নেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীরা। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় যুবলীগ চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিসহ নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের পদপ্রত্যাশী বেশ কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৩ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত সভাপতি চন্দন ধর ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমানের নেতৃত্বাধীন নগর যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে ২০১৩ সালের ৯ জুলাই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ১০১ সদস্যের কমিটির মেয়াদ ছিল ৯০ দিন। এর মধ্যে সম্মেলন করে নিয়মিত কমিটি করার কথা বলা হলেও গত ৯ বছরেও কমিটি হয়নি।

নগরের ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের মধ্যে কমিটি আছে মাত্র চারটিতে- উত্তর পতেঙ্গা, পতেঙ্গা, পাঠানটুলি ও শুলকবহর। সাংগঠনিক ১৬ থানায় কোনও কমিটি হয়নি। সংগঠনের নীতি নির্ধারক মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা কমিটির বিষয়ে তৎপর না হওয়ার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে নগর যুবলীগ। আহ্বায়ক কমিটি ছাড়াও সাবেক কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা পদ-পদবী ছাড়াই নগর যুবলীগের ব্যানারে কেন্দ্র ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

কেন্দ্রীয় যুবলীগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ মার্চ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ২ থেকে ৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম মহানগর সাংগঠনিক কমিটির জন্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে আসতে আগ্রহী নেতাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে বলা হয়। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নগর যুবলীগ সভাপতি পদের জন্য ৩৫ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী ৭২ জনের আবেদন জমা পড়ে। এসব আবেদন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষ করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

এদিকে বর্তমানে নগর যুবলীগ আহ্বায়ক কমিটির ৫ জন আহ্বায়ক এবং যুগ্ম আহ্বায়কদের মধ্যে দিদারুল আলম দিদার ও মাহবুবুল হক সুমন ছাড়া অন্য তিনজন আর যুবলীগ করতে আগ্রহী নন। তাই তারা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হওয়ার জন্য জীবনবৃত্তান্ত জমা দেননি।

নগর যুবলীগের সভাপতি পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- নগর ছাত্রলীগ স্টিয়ারিং কমিটির সাবেক সদস্য দেবাশীষ পাল দেবু, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য দিদারুল আলম দিদার, ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, নগর যুবলীগ বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল আনোয়ার, পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সিডিএর বোর্ড মেম্বার এম আর আজিম, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য সুরঞ্জিৎ বড়ুয়া লাবু।

মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চু বলেন, আমাদের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হলেও স্থান এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। সম্মেলনের জন্য কোনও সাব কমিটি করা হয়নি। আমরা সংগঠনকে আরও গতিশীল করতে যোগ্য নেতৃত্বের কমিটি চাই।