এইচ এম জসিম উদ্দীন : চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় আলহাজ্ব মোস্তফিজুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ এ. কে. এম. ফজলুল হক জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ’২২-এ শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি ১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের রসুলাবাদ গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি প্রখ্যাত আইনজীবি মরহুম এম. এ. বশর সাহেবের দ্বিতীয় পুত্র। তাঁর দাদা মাওলানা আবদুল হাকিম ছিলেন রসুলাবাদ সিনিয়র মাদ্রাসার মোহাদ্দিস।
অধ্যক্ষ এ. কে. এম. ফজলুল হক ১৯৭৯ সনে পটিয়া উপজেলার মোহছেনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক বৃত্তি ও ১৯৮৩ সনে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় হতে জুনিয়র বৃত্তি লাভ করেন। এরপর ১৯৮৫ সনে পটিয়া আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয় হতে পাঁচটি বিষয়ে লেটার’সহ প্রথম বিভাগে এস.এস.সি, ১৯৮৭ সনে ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম কলেজ হতে প্রথম বিভাগে এইচ.এস.সি, ১৯৯১ সনে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিষয়ে ২য় শ্রেণিতে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৯২ সনে উক্ত বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে।

কক্সবাজার জেলার স্বনামধন্য রামু কলেজে পদার্থবিদ্যা বিষয়ের প্রভাষক পদে যোগদান করেন ২০১৪ সালে। ২০১৪ সাল হতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ০৩ বছর ০৫ মাস ১১ দিন অত্যন্ত নিষ্টা, সততা, কর্তব্যপরায়ণতার সাথে চকরিয়া উপজেলার বদরখালী কলেজে অধ্যক্ষ পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি উক্ত সময়ে বদরখালী কলেজে একাডেমিক, সাচিবিক, প্রশাসনিক কার্যে ব্যাপক পরিবর্তন, গতিশীলতাসহ নতুন প্রাণের সঞ্চার করেন এবং কলেজটিতে ডিগ্রী পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে সক্ষম হন।

বিগত ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখ হতে অদ্যাবধি আলহাজ্ব মোস্তফিজুর রহমান কলেজে অধ্যক্ষ পদে কর্মরত আছেন। তাঁর কর্মকালীন সময়ে এ কলেজে ভৌত অবকাঠামো ও একাডেমিক পরিবেশের উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। স্বীকৃতি স্বরূপ অত্র কলেজ ২০১৮ সালের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,তিনি শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ এবং তাঁর কলেজের গণিত বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ ইলিয়াছ শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি অত্র কলেজে যোগদানের পর থেকে কলেজ এর একাডেমিক, সাচিবিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে ছন্দময় পরিবর্তন এনেছেন।

কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও সহকর্মীদের উপর তাঁর প্রভাব এবং অভিভাবক ও কর্তৃপক্ষের সাথে তাঁর সহযোগিতার প্রবণতা প্রশংসনীয়। তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তা, ব্যক্তিত্ব, সততা, সুনাম, প্রশাসনিক দক্ষতা ও আর্থিক শৃঙ্খলা, অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম ও দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার দক্ষতা অত্যন্ত সন্তোষজনক।
উল্লেখ্য, আইসিটি বিষয়ে তিনি দক্ষতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। কলেজ আঙ্গিনায় সবুজ ও পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস এবং স্বাস্থ্য অনুযায়ী কলেজ সজ্জিতকরণ, গুণগত শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও সৃজনশীল উদ্যোগ, সুকুমারবৃত্তির চর্চায় অত্র কলেজ উদাহরণযোগ্য।

তিনি একজন কর্মদীপ্ত, সৃজনশীল, সুদক্ষ, সুশৃংখল, উজ্জীবিত নিয়মানুবর্তী ও প্রশাসনিক প্রজ্ঞাবান অধ্যক্ষ। এর ধারাবাহিকতায় পুণরায় লোহাগাড়া উপজেলায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে আলহাজ¦ মোস্তফিুজর রহমান কলেজ। তাছাড়া উপজেলার শ্রেষ্ঠ কলেজ অধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন অত্র কলেজের সুযোগ্য অধ্যক্ষ এ. কে. এম. ফজলুল হক। শুধু তাই নয়, শ্রেষ্ঠ কলেজ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন এ কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ গোলাম রসুল ও শ্রেষ্ঠ রোভার শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন জনাব এসএম ইকবাল হোসেন এবং শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী স্বীকৃতিও পেয়েছেন একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী সামান্তা আমরিন।

কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, উপজেলা পর্যায়ে তাদের কলেজটি শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ আরও বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করায় তারা গর্বিত এবং আনন্দিত।

অধ্যক্ষ এ. কে. এম. ফজলুল হক বলেন, শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং করে যাচ্ছি। তিনি অত্র কলেজে যোগদানের পর চেষ্টা করেছেন শিক্ষার মানউন্নত করতে। কলেজের শিক্ষকগণ সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল এ শ্রেষ্ঠত্ব। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ’২০২২ উপলক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সেবা শাখা কর্তৃক এ স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবনে এ. কে. এম. ফজলুল হক ২ সন্তানের জনক। তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র ইসমামুল হক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর স্ত্রী মিসেস জেবুন নেছা ঐতিহ্যবাহী কক্সবাজার সিটি কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান। তাঁর শ^শুর প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ প্রফেসর এম. এ. বারী কক্সবাজার জেলার প্রাচীনতম ও স্বনামধন্য কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।