বার্তা পরিবেশক:
বিশ্বের অন্যতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার জেলার সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে আত্মস্বীকৃত মাদক কারবারী ৩ ভাইয়ের অপরাধ কর্মকান্ড থামছেই না বরং জনপ্রতিনিধিত্বের সাইন বোর্ড কাজে লাগিয়ে এখনো বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছে। এসব অভিযোগ তদন্ত স্বাপেক্ষে অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী উঠেছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ সালে ১৬ ফেব্রুয়ারী টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের উপস্থিতিতে ১ম দফায় ১০২ জন ইয়াবা চোরাকারবারী, মানব পাচারকারী ও হুন্ডি কারবারীরা নিজের অপরাধ স্বীকার করে সরকারের নিকট ইয়াবা এবং অস্ত্রসহ আত্মসমপর্ণ করেন। তম্মধ্যে উপজেলার হ্নীলা ইউপির পশ্চিম লেদার মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র বোরহান উদ্দিন, মৃত আবুল কাশেমের পুত্র নুরুল হুদা মেম্বার ও নুরুল কবির। তারা দীর্ঘদিন সাজা ভোগের পর আদালত থেকে বের হয়ে এখনো নানা অপরাধ কর্মে জড়িত রয়েছে। তাই এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় নতুন করে মাদক, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় এবং হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা দায়ের হলেও আইনের মাধ্যমে সাজাভোগ না হওয়ায় তারা দিনের পর দিন বিশেষ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
১৬ জুলাই রাত ১১টারদিকে পূর্ব লেদার মৃত লাল মিয়ার পুত্র জাহাঙ্গীরকে অপহরণের ঘটনায় পরদিন ১৭ জুলাই অপহৃতের বড় ভাই ও ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলম বাদী হয়ে পশ্চিম লেদার মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র বোরহান উদ্দিনকে প্রধান আসামী করে ৯ জন নামীয় এবং আরো ১০/১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। যা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সমঝোতা চেষ্টা বৈঠকে স্বীকার করেন তারা।
এছাড়া গত ২রা আগস্ট বিকাল সোয়া ২টায় ঢাকার রমনা মডেল থানার ওয়ার্ড নং-১৯ (নতুন), ৬৫ পাইওনিয়ার রোডের জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসের বিপরীতে রোগীবাহী একটি এম্ব্যুলেন্স হতে বড় ধরনের একটি ইয়াবার চালানসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে। উক্ত ঘটনায় এম্ব্যুলেন্সসহ ৮০ হাজার ইয়াবা জব্দের ঘটনায় এসআই (নিঃ) সাখাওয়াত হোসেন (বিপি) দায়েরকৃত মামলায় পশ্চিম লেদার নুরুল ইসলামের পুত্র বোরহান উদ্দিন (৪২) কে ৭নং পলাতক আসামী করে মামলা দায়ের করেন। চলতি বছরের গত ২৯ আগস্ট কক্সবাজার সদর মডেল থানার ঝিলংজা ইউপির মুহুরী পাড়া রাস্তার রাস্তার বিপরীতে আলী আহমদ অটোরাইস মিলের সামনে প্রধান সড়কে তল্লাশী চালিয়ে সাদা রংয়ের এ্যাম্বুলেন্স (চট্টমেট্টো-ছ-৭১-০৪৮৭) তল্লাশী করে ৫৩হাজার ইয়াবাসহ এ্যাম্বুলেন্স আটকের মামলায় পশ্চিম লেদার আবুল কাশেমের পুত্র নুরুল হুদা মেম্বারকে ৪নং এবং বোরহানকে ৫নং আসামীসহ আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫জনকে পলাতক আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ৫ সেপ্টেম্বর লেদার আব্দুস সালামের পুত্র দ্বীন মোহাম্মদ বিজিবির হাতে অস্ত্র-বুলেট, ইয়াবা ও আইসসহ আটকের মামলায় পলাতক আসামী মাফিয়া ডন বোরহান উদ্দিন। এছাড়া ঢাকা টেকেরে হাটে ২০/১১/২০১২ইং ৪৪হাজার ৮শ ইয়াবাসহ আটকের মামলায় বোরহান উদ্দিন ৭নং এবং নুরুল হুদা ৯নং পলাতক আসামী।
অপরদিকে মৃত আবুল কাশেমের পুত্র নুরুল কবির (৪৬) এর বিরুদ্ধে জি/আর নং-১১০/০৫ (টেকনাফ), তারিখ- ২১জুলাই ২০০৫ইং, জি/আর নং-৪৩৬/১১ (টেকনাফ) তারিখ-১১অক্টোবর, ২০১১ইং, জি/আর নং-৪৭৯/১১ (টেকনাফ) তারিখ-২৫অক্টোবর ২০১১ইং, জি/আর নং-৪২৭/১৩, তারিখ-১২আগস্ট ২০১৩ইং, জি/আর নং-৫৪, তারিখ-৮ফেব্রুয়ারী ২০১৪ইং,জি/আর নং-১১০, তারিখ-২০মার্চ ২০১৪ইং, জি/আর নং-৩৩৯/১৫ (টেকনাফ), তারিখ-১৩মে, ২০১৫ইং, জি/আর নং-১১১, তারিখ- ১২মার্চ ২০১৬ইং, টেকনাফ মডেল থানার এফআইআর নং-৮৫/৩৫৩,তারিখ-২১এপ্রিল ২০১৭ ইং। এসব অপরাধে লিপ্ত থেকেও তারা সমাজের দানবীর এবং জনপ্রতিনিধি। তারা পরস্পর চাচাত-জেঠাতো ভাই। তারা মেম্বার পদকে পুঁজি করে বিশেষ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এলাকায় মাদক চোরাচালান, মানব পাচার, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় এবং জমি জবর দখলের মতো বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত।
এলাকার শান্তি-শৃংখলা রক্ষায় এই ভাইয়ের অপকর্মের বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।