সাইফুল আলমঃ
মহান ২১ শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে আমাদের গর্বের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্র কর্তৃক নির্ধারিত (যেমন বিদেশি কোন বন্ধু রাষ্ট্র প্রধান মারা গেলে) বিশেষ কোন দিন কে শোক দিবস ঘোষণা করলে দেশের অভ্যন্তরে সরকারী, বেসরকারি,সায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান সহ বিদেশে প্রতিটি কূটনৈতিক মিশনের অফিসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখতে হয়। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখতে গিয়ে অনেকেই আমরা বিভ্রান্তির মধ্যে পরে যাই। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা রক্ষণাবেক্ষণের সাথে জড়িত অফিস সহকারী কিংবা দপ্তরীদের এ সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকায় এবং যথাযত তদারকির অভাবে বিভিন্ন দিবসে অনেক জায়গায় যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় পতাকা প্রদর্শন করতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পরতে দেখা যায়। আমাদের অনেকের ধারণা জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা মানে পতাকা যেই খুটির সাথে বেঁধে প্রদর্শন করা হয় সেই খুঁটির অর্ধেক উচ্চতায় বেঁধে প্রদর্শন করাকেই বুঝায়। এরকম ধারনা টা একেবারেই ভূল। আজকের দিনে অনেক প্রতিষ্ঠানেই দেখবেন কেউ না কেউ এরকম ভূল করেছে। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা মানে পতকার এক প্রস্থ নীচে খুঁটিতে বেঁধে প্রদর্শন করা বুঝায়। অর্থাৎ খুঁটির উচ্চতা যাই হোক না কেন পতাকার প্রস্থ যদি ৬ ফুট হয় তাহলে ৬ ফুট নীচে নামবে, পতাকার প্রস্থ যদি ৩ ফুট হয় তাহলে ৩ ফুট নীচে নামবে। অর্ধনমিত মানে খুঁটির অর্ধেক উচ্চতায় পতাকা বেঁধে প্রদর্শন করার ধারনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে।
এবার আসি পতাকা অর্ধনমিত করে প্রদর্শন কিংবা অর্ধনমিত অবস্থায় পতাকা নামানোর উপায় কি..
আপনি যখন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে প্রদর্শন করবেন তখন শুরুতেই পতাকা ধীরে ধীরে খুঁটির পূর্ণ উচ্চতায় তুলে ৩০ সেকেন্ড রেখে পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে স্যালুট করবেন। এরপর পতাকার এক প্রস্থ অনুমান নীচে নামিয়ে বেঁধে ফেলবেন। আবার অর্ধনমিত অবস্থা থেকে কোনভাবেই পতাকা নামিয়ে ফেলা যাবে না। অর্ধনমিত অবস্থায় সূর্যাস্তের আগে জাতীয় পতাকা নামানোর সময় পতাকা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক উচ্চতায় নিয়ে ৩০ সেকেন্ড রেখে তারপর পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে স্যালুট দিতে হয়। স্যালুট শেষ হলে আস্তে আস্তে নামিয়ে ফেলতে হবে।
অনেক প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি বিভিন্ন বাহিনী এবং ইউনিটের পতাকা প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে পতাকা উত্তোলন এবং নামানোর সময় অবশ্যই জাতীয় পতাকা আগে উত্তোলন করতে হবে এবং নামানোর সময় অন্যান্য পতাকা নামানোর পর সবশেষে জাতীয় পতাকা নামতে হয়।
যথাযথ প্রক্রিয়ায় জাতীয় পতাকা ব্যবহারের জন্য জাতীয় পতাকা বিধিমালা -১৯৭২ (সংশোধিত-২০১০) রয়েছে। জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষা করতে সবাইকে এই বিধিমালা সম্পর্কে ধারণা রাখা উচিত।
লেখক-
সাইফুল আলম
অফিসার ইনচার্জ
জেলা গোয়েন্দা শাখা, কক্সবাজার।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।