আবু সায়েম, কক্সবাজার:
মু্ক্তির উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলা ২০২২। সাধারণ মানুষের দোরগোঁড়ায় পৌঁছে গেলো কক্সবাজার জেলার উন্নয়নের চিত্র। মেলার কারণে মানুষ জানতে পারলো তাদের জন্য অপেক্ষমান অনিন্দসুন্দর এক আগামির কথাও উন্নয়নের সামগ্রিক চিত্র। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গত ১৭ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত বাহারছড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঠে মুক্তির উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ২৩ মার্চ ( বুধবার)সমাপনী দিনে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে মুক্তির উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলা ২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে প্রতিযোগীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এবারের মেলায় সামগ্রিক উন্নয়ন এবং শতভাগ সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ১ম স্থান পুরস্কার অর্জন করেন। প্রথম স্থান পুরস্কার অর্জন করায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ঋত্বিক চৌধুরী কে ক্রেস্ট ও সম্মাননা প্রদান করেন। মেলায় কক্সবাজারের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দফতর অংশগ্রহণ করেন। মেলার কারণে জেলায় অবস্থানরত মানুষ উন্নয়নের এই চিত্র দেখতে পেলো। শুধু কক্সবাজার শহরে অবস্থানরতরা নন। জেলার ৭১টি ইউনিয়নের মানুষই এই সুবিধা পেয়েছে। কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবুল মনজুর বলেন,মুক্তির উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ৫০ বছর পদার্পন উপলক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং শতভাগ সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণসহ সামগ্রিক ভাবে বিচার বিশ্লেষণে ১ম স্থান পুরস্কার অর্জন করে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে ধাপে ধাপে যে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড নজির স্থাপন করেছেন তা আমরা মেলায় স্টলের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
তিনি আরো বলেন, ধাপে ধাপে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক অর্জনগুলোর মধ্যে কক্সবাজার জেলায় নিরাপদ পানি বিতরণ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা কে সামনে রেখে পানির গুণগত মান পরীক্ষায় ল্যাবরেটরি স্থাপন, মনুষ্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ল্যাবরেটরি স্থাপন, সারফেস ওয়াটার রিজার্ভার ও ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে সুপেয় ও বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করণ সহ বিভিন্ন বহুমুখী উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন।মেলার স্টলে জয় বাংলা স্লোগান কে সামনে রেখে জয় বাংলা কর্ণার স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে মেলায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাসের সমস্ত ডকুমেন্টারি আগত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এমন কি মেলায় আগত দর্শনার্থীদের বিনামূল্যে পানি পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মেলায় বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, আগত দর্শনার্থীদের সুপেয় পানি সরবরাহ করা হয়েছে। মেলায় সকল ক্যাটাগরি বিবেচনা করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ১ম স্থান পুরস্কার অর্জন করে।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ বলেন, সত্যিকার অর্থে মুক্তির উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলা যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের স্টলের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে স্টেপ বাই স্টেপ যে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়িত করেছেন এবং শতভাগ সেবা প্রদান নিশ্চিত করণে তাদের ভূমিকা মেলার স্টলের মাধ্যমে তা প্রকাশে সফল হয়েছেন।সুসজ্জিত চমৎকার স্টলের মাধ্যমে
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বাংলাদেশের পতাকাবেয়ে
৫০ বছরের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ঋত্বিক চৌধুরী বলেন,স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। নিরাপদ পানি সরবরাহের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের দায়িত্ব অর্পন করে ১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই)। পরবর্তীতে ১৯৪৫ সালে এর সাথে যুক্ত করা হয় স্যানিটেশন সেবা প্রদানের দায়িত্ব। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের অব্যহিত পরে সরকার প্রথমেই ধ্বংসপ্রাপ্ত পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন পদ্ধতি গুলোর পুনর্বাসনের গুরুত্বারোপ এবং তৎপরবর্তীতে নতুন অবকাঠামো স্থাপন শুরু করে ডিপিএইচই’র মাধ্যমে। এর ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ ৫০ বছরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বিভিন্ন বহুমুখী উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন।জনগণের মাঝে প্রত্যক্ষভাবে শতভাগ সেবা প্রদান নিশ্চিত করণে কাজের গতি তরান্বিত করেছেন। সবকিছু মাথায় রেখে মুক্তির উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলায় ডিপিএইচএই’র সামগ্রিক কার্যক্রম সুসজ্জিত স্টলের মাধ্যমে প্রকাশের চেষ্টা করেছি।আয়োজক কমিটির বিচার বিশ্লেষণ ও সামগ্রিক ক্যাটাগরি মূল্যায়িত করে ১ম স্থান পুরস্কার অর্জন করি। এ পুরস্কার আমার একার না,এ অর্জন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সকল সদস্যদের।
প্রতিযোগীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও মুক্তির উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় আওয়ামিলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডঃ সিরাজুল মোস্তফা,চলচ্চিত্র পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা কাউসার চৌধুরী,কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডঃ ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিকসহ জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বক্তব্য প্রদান করেন।