হ্যাপী করিম, মহেশখালী :
মহেশখালী উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর উদ্যোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহাফুজুল হক। অনুষ্ঠানের শুরুতে নবাগত উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারীগন কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য ও মহেশখালী উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক এমপি-কে ফুলেল শুভেচছা প্রদান করেন।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক এমপি। তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে।

অনুষ্ঠানে আবাসিক মেডিকেল অফিসার জনাব ডাঃ শিব শেখর ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নবনিযুক্ত মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইয়াসিন, মহেশখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জনাব আনোয়ার পাশা চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ছালেহ আহমদ, মহেশখালী থানার ওসি (তদন্ত) আশেক ইকবাল, কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ কামাল, মহেশখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল বশর পারভেজ’সহ হাসপাতালে নবনিয়োগকৃত গাইনোকোলজিস্ট ও এনেসথেসিয়া কনসালটেন্ট, নবনিযুক্ত ৪২তম বিসিএস এর মেডিকেল অফিসার বৃন্দ সহ সবাই নিজ নিজ পরিচয় পর্ব সম্পন্ন করেন।অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইছএফপিও) মহোদয় তার বক্তব্যে বলেন, আমরা হাসপাতালে অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়ে প্রতি মাসে ব্যবস্থাপনা কমিটির মাসিক সভা আয়োজন করি। মহেশখালীর মানুষের অনেক দিনের আশা প্রসূতি সেবায় সিজারিয়ান অপারেশন। আমরা অতি শীগ্রই সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারব।হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার থেকে শুরু করে বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ সর্বোচ্চ সেবা দিতে বদ্ধপরিকর। হাসপাতাল অবকাঠামোর বিভিন্ন পরিসংখ্যান তিনি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আশির দশকে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল চালু করা হয়। পরবর্তীতে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২০০০ সালে প্রসূতি সেবা চালু করা হয়। অবকাঠামোগত সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থাকার পর অ্যানেস্থেসিয়া ও গাইনি চিকিৎসকের অভাবে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ ছিল। তবে নরমাল (স্বাভাবিক) প্রসব চালু ছিল। চলতি মাসে এ হাসপাতালে ও সিসি’সহ মোট ১৫৫টি নরমাল প্রসব হয়েছে। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন ডাঃ মোহাম্মাদ হাফুজুর হক। তিনি যোগদানের পর থেকে চিকিৎসা সেবার মান উন্নত করার চেষ্টা করছেন।

জানা গেছে, জেলার প্রত্যন্ত উপজেলা মহেশখালী জেলা শহর থেকে উত্তরে প্রায় ৩০/৪০ কিলোমিটার দূরে অবিস্থত। সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ থাকায় ভোগান্তী পোহাতে হয়েছে উপজেলাবাসীকে। সরকারি সেবার জন্য এ সময়ে উপজেলাবাসীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল অথবা পার্শ্ববর্তী চকরিয়া জেলায়, বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করানোর ব্যবস্থা না থাকায়, হাসপাতাল থেকে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করার প্রয়োজন হলে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল অথবা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হতো।

মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহাফুজুল হক বলেন, অবশেষে আগামী মে মাসের শুরুতে প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশন চালু
হতে যাচ্ছে, হাসপাতালে তুলনায় অপারেশনের সকল সরঞ্জাম থাকার পরও অ্যানেস্থেসিয়া ও গাইনি চিকিৎসক না থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ ছিল। বর্তমানে সপ্তাহে দু’দিনের জন্য অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া আমি নিজে সিজারিয়ান অপারেশন করেছি। এখন থেকে নিয়মিত এ সেবা দেওয়া হবে। তবে প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি আমার পক্ষে শতভাগ এ সেবা দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। গাইনি চিকিৎসক যোগদান করলে সেবার মান আরো বেড়ে যাবে। যেসব রোগীদের বাইরে যেতে হতো তারা এখন এ হাসপাতালে সেবা পাবে বলে আশা করছি।