সিবিএন :
কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে যৌতুক দাবির মামলার বাদি লতিফা বেগমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা এ.এস.আই আবু তাহেরের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলেছেন বিচারক।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি.আর মামলা নং-৪৯/২০২০ (টেকনাফ) চার্জ শুনানীর ধার্য্য তারিখে বিচারক আলমগীর মুহাম্মদ ফারুকী এই নির্দেশ প্রদান করেন। আসামি মোঃ রায়হানকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
আদেশের কপি পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে বলে আদালত সুত্রে জানা গেছে।
আসামিপক্ষ দাবি করেন, লতিফা বেগম একজন মিথ্যুক ও প্রতারক নারী। ইতিপূর্বে সে রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিচয়ে ছেনুয়ারা বেগম নাম ধারণ করে মোঃ রায়হানকে স্বামী উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যৌতুক দাবির অভিযোগে সি.পি-৩৪৮/২০১৯ নং মামলা দায়ের করেন। তদন্তান্তে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মামলা খারিজ করা হয়। অতঃপর একই বাদী বাংলাদেশী নাগরিক পরিচয়ে লতিফা বেগম নামে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি.আর-৪৯/২০২০(টেকনাফ) নং মামলা করেন। অভিযোগ শুনানীর পর্যায়ে বিচারকের নিকট আসামিপক্ষ ঘটনার বিস্তারিত উপস্থাপন করে।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মুহাম্মদ ফারুকী সংশ্লিষ্ট নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্পের কর্তৃপক্ষ বরাবর অত্র বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন প্রদানের জন্য আদেশ প্রদান করলে আসামীর পরিচয় গোপন বিষয়ে সত্যতা পান মর্মে উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্প ইনচার্জ।
প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, বর্ণিত মামলার বাদী লতিফা বেগম রোহিঙ্গা পরিচয়ে ছেনুয়ারা বেগম নাম ধারণ করে সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে আসছে।
বাদীর নিয়োজিত আইনজীবী মোঃ হারুন অর রশিদের বক্তব্য শ্রবণ করেন। তিনিও জানান যে, সি.আর-৪৯/২০২০(টেকনাফ) নং মামলার বাদী লতিফা বেগম এবং সিপি-৩৪৮/১৯ নং মামলার বাদী ছেনুয়ারা বেগম একই ব্যক্তি। তিনি দুটি মামলায় ভিন্ন ভিন্ন নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। অতঃপর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বাদীকে ব্যাখ্যা প্রদান করার নির্দেশ দিলে বাদী লতিফা বেগম তার জন্ম সনদ ও তার মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি দাখিল করেন। দলিলদ্বয় পর্যালোচনায় বাদী লতিফা বেগমকে বাংলাদেশী নাগরিক মর্মে আপাতঃ দৃষ্টে প্রতীয়মান হয়। বাংলাদেশী নাগরিক সম্পর্কিত লতিফা বেগম নামীয় কাগজপত্র থাকার পরও কিংবা লতিফা বেগম বাংলাদেশী নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও ছেনুয়ারা বেগম নাম ধারণ করে রোহিঙ্গা পরিচয়ে শরণার্থী ক্যাম্প থেকে সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেন।
অধিকন্তু সিআর-৪৯/২০২০ নং মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা তার তদন্ত প্রতিবেদনে বাদী লতিফা বেগমকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি এনজিও সংস্থার ভোলন্টিয়ার হিসেবে চাকুরীরত মর্মে উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তে বাদীর প্রকৃত পরিচয় উদঘাটনে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবং বাদীর রোহিঙ্গা পরিচয় উদঘাটন না করে ভিন্নরূপ তদন্ত করায় উক্ত বিষয়ে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অবগতির জন্য আদালত কর্তৃক আদেশের কপি প্রেরণ করা হয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।