এম.মনছুর আলম,চকরিয়া :

সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে চকরিয়ায় বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চালিয়ে যাচ্ছে বাড়ির হোল্ডিং এসেসমেন্ট ও হোল্ডিং নাম্বার প্লেট প্রদানের কাজ। ফলে সরকারি নির্দেশনা অমান্যের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ার পাশাপাশি বারবার অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।এনিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

জানাগেছে, উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নে বিগত ৩-৪ বছর পূর্বে প্রতিটি বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স এসেসমেন্ট ও হোল্ডিং নাম্বার প্লেট প্রদানের কাজ করা হয়েছিল। তখন একটি এনজিওর মাধ্যমে এই কাজ গুলো করা হয়। টিনের হোল্ডিং নাম্বার সম্বলিত একটি করে প্লেট প্রত্যেক বাড়িতে দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ সাধারণ জনগণের কাছ থেকে প্লেট সরবরাহ বাবদ ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছিল। সরেজমিন তদন্তে করলে তবে কোন বাড়িতে হোর্ল্ডিং প্লেট স্থাপনের নজির পাওয়া মুশকিল হবে। বাড়ির মালিক তাদের বাড়ির হোল্ডিং নম্বর বলতে পারবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। বিগত ২০১৬ সালে উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে প্রতিটি বাড়ির আর্থ-সামাজিক অবস্থান জরিপ, নিজস্ব ওয়েব সাইটে অন্তুর্ভূক্ত, হোল্ডিং ট্যাক্স এসেসমেন্ট ও ডিজিটাল হোল্ডিং নাম্বার প্লেট স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করা হয়। এবারও কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় এনজিও বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উপর। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ, ইউপি-২ অধিশাখা ১৬/১০/১৬ তাং ৮৮৩ নং স্মারকে উপ-সচিব মোঃ মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত ডিজিটাল হোল্ডিং নাম্বার প্লেট স্থাপন প্রসঙ্গে এক পত্রে “স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এ কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে হোল্ডিং এসেসম্যান্ট ও নাম্বার প্লেট প্রদানের কোন সুযোগ নেই।” উল্লেখ করে পত্র প্রেরণ করেন। এরই আলোকে কক্সবাজার জেলার আওতাধীন ইউনিয়ন পরিষদের জ্ঞাথার্থে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় (স্থানীয় সরকার শাখা) উপ-পরিচালক শ্রাবস্তী রায় স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে গত ২১ মার্চ ২০২২ইং তারিখ স্বারক নম্বর ০৫.২০.২২০০.১২৬০৯.০০৩.২০১৯.১৮০ মূলে কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে (এনজিও) দিয়ে হোল্ডিং এসেসমেন্ট ও নাম্বার প্লেট প্রদান না করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে চকরিয়ায় ৬টি ইউনিয়ন পরিষদে বাড়ির হোল্ডিং এসেসমেন্ট ও হোল্ডিং নাম্বার প্লেট প্রদানের কাজ বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) মাধ্যমে করা হচ্ছে। উপজেলার যে সব ইউনিয়নে হোল্ডিং এসেসমেন্ট ও হোল্ডিং নাম্বার প্লেট প্রদানের কাজ করা তা হলো, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন, হারবাং ইউনিয়ন, বদরখালী ইউনিয়ন, লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন, বিএমচর ইউনিয়ন ও কোনাখালী ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নে উক্ত নির্দেশনা অমান্য করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে উক্ত কাজ করানো হচ্ছে। এ কাজে (হোল্ডিং নাম্বার প্লেটের মূল্য বাবদ প্রত্যেক হোল্ডিং মালিকের নিকট থেকে ১০০ টাকা থেকে দেড় শত টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের মত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ (ইউনিয়ন পরিষদ) এর কার্যক্রম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে এলাকাবাসী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান জানান, যে সব ইউনিয়নে এনজিওর মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে তাদের হোল্ডিং ট্যাক্স এ্যাসেসমেন্ট ও ডিজিটাল হোল্ডিং নাম্বার প্লেট স্থাপনের কাজ করা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় (স্থানীয় সরকার শাখা)
থেকে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইতিমধ্যে কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে (এনজিও) দিয়ে হোল্ডিং এসেসমেন্ট ও নাম্বার প্লেট প্রদান না করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যে সব ইউনিয়ন নির্দেশনা উপেক্ষা করে কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।