এম.এ আজিজ রাসেল:
কক্সবাজারে রাখাইন নববর্ষ পালনের বর্ণিল আয়োজন চলছে। রাখাইন সম্প্রদায় আগামী ১৭ এপ্রিল ১৩৮৩ মগীসনকে বিদায় জানিয়ে সানন্দে বরণ করবে ১৩৮৪ মগীসনকে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইনরা বর্ষ বরণে প্রতিবছর সাংগ্রাই পোয়ে (জলকেলি) উৎসব ব্যাপক উৎসাহ—উদ্দীপনায় পালন করে থাকে। এ উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের প্রথম দিন শহরে বুদ্ধ স্নানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে জলকেলি উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকালে শহরের বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে রাখাইন শিক্ষার্থীরা। শোভাযাত্রাটি বিভিন্ন রাখাইন পল্লী প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় অগ্গমেধাস্থ মাহাসিংদোগ্রী মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করেন নগদ টাকা, চাল, চিনি, দুধ, কলা, নারিকেল, মোমবাতি, সাবান দেশলাইসহ হরেক রকম পণ্য। গ্রহণ করেন পঞ্চশীল। এ সময় ওই বৌদ্ধ বিহারের ধর্মীয় গুরু নানা নির্দেশনা প্রদান করেন।
অনুরূপ বৃহস্পতিবার বিভিন্ন এলাকার প্রবীণ নারী—পুরুষ মন্দিরভিত্তিক শোভাযাত্রা বের করবেন। তারা পঞ্চশীল, অষ্টশীল ও বিভিন্ন জিনিসপত্র দান করবেন। এ ছাড়া ১৫ ও ১৬ এপ্রিল রাখাইন পল্লীগুলোতে শিশুরা জলকেলিতে মেতে উঠবে। আর ১৭ এপ্রিল থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত জাঁকজমকভাবে অনুষ্ঠিত হবে মূল সাংগ্রাইং পোয়ে বা জলকেলি উৎসব। নববর্ষে রাখাইন বয়স্ক নারী—পুরুষরা উপবাসও করে থাকেন। এ সময় প্রাণী হত্যা, মিথ্যা বলাসহ কমপক্ষে ৮টি দুষ্কর্ম থেকে দূরে থাকতে হয়।
কক্সবাজার শহর ছাড়াও মহেশখালী, টেকনাফ, সদর, হ্নীলা, চৌধুরী পাড়া, রামু, পানিরছড়া, চকরিয়ার মানিক পুরসহ রাখাইন অধ্যুষিত এলাকা গুলোতে সপ্তাহ জুড়ে নববর্ষ পালনে নানা অনুষ্ঠান পালিত হবে। ইতিমধ্যে শহরের টেকপাড়া, হাঙর পাড়া, বার্মিজ স্কুল এলাকা, চাউল বাজার, পূর্ব—পশ্চিম মাছ বাজার, আরডিএফ প্রাঙ্গণ, ক্যাং পাড়া ও বৈদ্যঘোনাস্থ থংরো পাড়ায় তৈরি করা হচ্ছে জলকেলির ২০টি নান্দিক প্যান্ডেল। রঙিন ফুল আর নানা কারুকার্যে্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্যান্ডেলের চারপাশ। সবার মাঝে এখন বর্ষ বরণের আমেজ। নতুন সাজে সাজছে কক্সবাজারের রাখাইন পল্লীর প্রতিটি বাড়ি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।