বিশেষ সংবাদদাতা ॥ মানবিক কারণে জায়গা দিলেও সন্ত্রাসী রোহিঙ্গারা স্থানীয় বাসিন্দাদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে। দোকানগৃহ গড়ে তোলতে স্থানীয়দের ক্ষেত-খামার কেড়ে নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মতে, আগে স্থানীয়দের অধিকার, পরে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের স্থান। স্থানীয় বাসিন্দারা যেন নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়-এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। ঘর নির্মাণ করতে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা বালুখালীর আবদু ছাত্তারের ক্ষেত-খামার দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

জানা যায়, উখিয়ারঘাট বালুখালী তেলীপাড়ার আবদু ছাত্তার একজন বনজায়গীরদার। সরকারী বন রক্ষার্থে বনবিট কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করার জন্য বনবিভাগ থেকে অন্তত ৪০বছর আগে তাকে দুই একর রিজার্ভ জায়গা দেয়া হয়। সেখানে তিনি কুড়ে ঘর তৈরী ও শাকসবজি ক্ষেত করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। ২০১৭সালে রোহিঙ্গার ঢল নামার পর ভিলেজার ছাত্তারের অধিকাংশ জায়গা দখলে নিয়ে ঝুপড়ি ঘর তৈরী করে দিব্যি বসবাস করছে রোহিঙ্গারা। এতে মানবিক কারণে কোন ধরণের বাধা দেয়া হয়নি রোহিঙ্গাদের। কিন্তÍু সামান্যটুকু জায়গায় ছাত্তারের বৃদ্ধা মা শামসুন্নাহার কর্মীশাক রোপন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। উখিয়ার ক্যাম্প-নং-৭ এ অবস্থিত ওই জায়গা টুকুর প্রতি লুলোপ দৃষ্টি পড়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের। তারা সেখানে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে একটি এনজিও সংস্থাকে গোদাম বসিয়ে দিতে চাইছে। ক্যাম্প ইনচার্জকে ভুল ধারণা দিয়ে সেখানে ২৩টি রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন ঘর নির্মাণ করতে তোড়জোড় শুরু করেছে আলইয়াকিন নামধারী সন্ত্রাসীরা। যাতে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত আবদু ছাত্তারের জমিটুকু রোহিঙ্গাদের দখলে নেয়া যায়।

সূত্রে জানা গেছে, কিছু কিছু এনজিওর প্ররোচনায় কৌশলে নতুন করে রোহিঙ্গা প্রবেশ করছে বিভিন্ন ক্যাম্পে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চোখে ফাঁকি দিয়ে ভারত ও মিয়ানমার থেকে কৌশলে উখিয়া টেকনাফের আশ্রয় ক্যাম্পে ঢুকে পড়ছে ওইসব নতুন রোহিঙ্গা। যদিও নতুন করে কোন রোহিঙ্গাকে স্থান না দিতে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশ রয়েছে। সরকারের রেজিস্টারভূক্ত না হলেও জাতিসংঘের খাতায় ঠিকই তাদের নাম লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ওইসব রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের জায়গা জবরদখল করছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ চড়া দামে ওই জায়গা কিনে মুদি দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসা গড়ে তোলছে। জায়গা ছেড়ে দিতে না চাইলে আল-ইয়াকিন নামধারী সন্ত্রাসীরা রাতের বেলায় মুখোশ পরে স্থানীয়দের বাড়িঘরে এসে অপহরণ-গুম ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থার কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের জানমাল রক্ষাসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকার বাংলাদেশী নাগরিকরা।