বার্তা পরিবেশক :
মারোত। মানসিক রোগিদের নিয়ে কাজ করে টেকনাফ উপজেলায় এমন একটি সংগঠন। দীর্ঘ ৫ বছরের পদযাত্রায় কতো দুখের ঘরে সুখ এনে দিয়েছে। আশ্রয়হীন, খাদ্য বিহীন, ছাদ বিহীন মানুষগুলো সেবা দিয়ে আশ্রয় দিয়ে, খাদ্য দিয়ে আজ এপর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছে। কিছু কিছু মানসিক রোগিদেরকে তাদের আত্মীয় স্বজনের কাছে পৌঁছিয়ে দিতেও সক্ষম হয়েছে মারোত। কতো মানসিক রোগির বেওয়ারিশ লাশ আইনীপ্রক্রিয়া শেষে দাফন করেছে মারোত। বলতে গেলে যেখানে কেউ নেই সেখানেই মারোতের একদল নিরলস স্বেচ্ছাসেবক মানসিক রোগিদের কল্যাণে তাদের মেধা, শ্রম দিয়ে যাচ্ছে অনবরত।
মানসিক রোগিদের জন্য রক্ত সংগ্রহ, রক্তদান, তাদের সুচিকিৎসা, কাপড়, কম্বল, ঔষধ যোগানো সবকিছুই মারোত নিজের মতো করে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
এতকিছুর মধ্যেও এই মানসিক রোগিদের মধ্যে যখন নরপশুদের থাবা পড়ে,নজর পড়ে,কিংবা বিকৃত রুচির অমানবিক হায়েনার দল মানসিক রোগিদেরকে মা বানিয়ে বাচ্চার বাবারা পালিয়ে যায়, তখন ভাবি কোন সমাজে আমরা আছি। কিরূপ কুরুচিপূর্ণ মানুষের সাথে আমাদের বসবাস। কি জঘন্য অপরাধে অপরাধি মানুষ গুলো আমাদের সমাজকে কলুষিত করছে।
গতকাল শনিবার রাত আনুমানিক ১২ টায় থানা থেকে মারোতকে ফোনে জানানো হয় ঠিকানা বিহীন এক পাগলী মা হতপ চলেছে। সে সন্তান প্রসবের বেদনায় ছটফট করছে।তাদের অনুরোধ মারোত যেন কাজে সহায়তা করে এবং খরচাপাতি দিয়ে সন্তান প্রসবের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করায়। মারোতের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মারোত পিছ পা হয়নি। সব ধরণের সহায়তার আশ্বাস দিয়ে থানার মাধ্যমে টেকনাফের বাহার ছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকার ঐ পাগলীটাকে চৌকিদারের মাধ্যমে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। রাত আনুমানিক ১ টা ১০ মিনিটে পাগলীটি একটু ফুটফুটে কন্যা সন্তান প্রসব করে। মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছে। তবে শিশুর বাবা কে সে প্রশ্নের জবাব মিলেনি কোথাও। আহা সেলুকাস! কী বিচিত্র এই দেশ।
হাসপাতালের সব দেনা শোধ করেছে মারোত। ইতোমধ্যে শিশুটিকে দত্তক নিতে অনেকেই রাজী হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মারোত কেন্দ্রীয় সভাপতি আবু সুফিয়ান।