নিজস্ব প্রতিবেদক :

কক্সবাজারের রামুতে এক রেমিট্যান্স যোদ্ধার জমি দখলে নিতে বসতভিটায় দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর, ও অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ উঠেছে রশিদনগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মাছুম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী থানায় একেরপর এক অভিযোগ করে ও অদৃশ্য কারণে আইনী সহযোগিতা পাচ্ছে না। চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, রামু রশিদ নগর ইউনিয়নের ধলির ছড়া নাজির পাড়া এলাকার মৃত গোরা মিয়ার ছেলে রেমিট্যান্স যোদ্ধা গিয়াস উদ্দিনের পানির ছড়া বাজার এলাকার নির্মাণাধীন ভবনে একের পর এক হামলা, ভাং আরচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে ।

রেমিট্যান্স যোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন ও তার বোন সামিনা ইয়াসমিন জানান, রশিদ নগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মাছুম ও তার সহযোগিরা ২৩ নভেম্বর ভোর সাড়ে চারটার দিকে তাদের বসত ভিটায় ও টিনের বাউন্ডারিতে আগুন লাগিয়ে দেয় । ৯৯৯ এ ফোন করেন ইয়াসমিন। ৯৯৯ ফায়ার সার্ভিসের সাথে কানেক্ট করে দেয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসবে বলে আসে নাই। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
এ জমির রায় আমাদের পক্ষে দিয়েছে আদালত। তারপরেও আইনের কোন তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মসজিদের নাম ভাঙ্গিয়ে জমি জবর দখলে নিতে দফায় দফায় হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুর চালাচ্ছে ।

তিনি আরো জানান, এর আগে গত ১৪ অক্টোবর মধ্যরাতে আমাদের জমি দখলের জন্য ভিটায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল । এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও কোন ব্যাবস্থা নেয়নি পুলিশ। উল্টো বিভিন্ন হামলা, হয়রানী, ভাঙ্গচুর ও জীবন নাশের হুমকি দিয়ে আসছে মাছুম। মাছুম তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবী, ভাংচুর ও জমি দখলে নেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভূক্তভোগী সামিনা ইয়াসমিন অভিযুক্তদের আসামী করে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৩৩২/২১।
তার ভাই গিয়াস উদ্দিন দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার সুযোগে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে জমি জবর দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। জমি দখলের জন্য বিভিন্ন সময় নির্মাণাধীন ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙ্গচুর ও লুটপাটও চালিয়েছে তারা। নির্মানাধীন কাজের বাউন্ডারি ও ভিটায় আগুন দিয়েছে রাতের আধারে।

এর আগেও গত ২২ আগস্ট ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে প্যানেল চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা মিলে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করেছিল। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সামিনা ইয়াসমিন জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরীর আবেদন জমা দেন থানায়। অজ্ঞাত কারনে ডায়েরী তদন্ত না করে বারবার থানায় বসে সমাধান করার তাগিদ রামু থানার ওসি তদন্ত। সর্বশেষ গত ২৭ আগস্ট থানায় উভয়পক্ষের বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হয়।

রামু রশিদনগর পানিরছড়া বাজারের নৈশপ্রহরী জানান, গতমাসেও রাতের আধারে দুর্বৃত্তরা বোরকা পড়ে অস্ত্র নিয়ে আগুন লাগিয়েছিলো। গতকাল ভোরেও কে বা কারা এসে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়। রাতের অন্ধকারে তাদেরকে চেনা সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি।
অভিযোগ উঠা প্যানেল চেয়ারম্যান মাসুমের মোবাইলে রিং দিয়ে রিসিভ করার পর সংবাদকর্মী পরিচয় দিলে কথা বলতে রাজি না হওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী রামু থানার এস আই শাহাদাৎ জানান, ভোর রাতে আগুন দেয়ায় ঘটনাস্থলে কোন প্রত্যক্ষদর্শীকে পায়নি। তবে আগুনে পুড়া কিছু টিন ও ছাই দেখতে পেয়েছি। কারা আগুন দিয়েছে খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি।

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, প্রবাসী গিয়াস উদ্দিনের জমিসংক্রান্ত বিষয়টি দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে দুই পক্ষ আমাদের কাছে কাছে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেছে। তবে সর্বশেষ অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি ঘটেছে খাস জমি ও সড়ক বিভাগের জমি দখলের বিষয়কে কেন্দ্র করে। অভিযোগ তদন্ত করার জন্য আমাদের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলো। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।