বার্তা পরিবেশক:
উখিয়া সদর রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের পদপ্রার্থী সাদমান জামী চৌধুরী এক নির্বাচনী পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুহুর্তের মধ্যে পথসভাটি জনসমুদ্রে পরিনত হয়।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় উখিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত পথসভায় সভাপতিত্ব করেন, উখিয়ার প্রবীণ রাজনীতিবিদ কাজী হেলাল উদ্দিন।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী।
সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাদমান জামী চৌধুরী বলেন, রাজাপালং ইউনিয়নের অত্যাচারিত, নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছি। আজকে পথসভাটি জনসমুদ্রে পরিনত হওয়ার মধ্যদিয়ে প্রমাণ করেছে আগামী ১১ নভেম্বর বিপূল ভোটের মাধ্যমে ঘোড়া মার্কাকে বিজয়ী করবেন। তিনি এতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, জনগণ যেন নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করতে পারেন সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকার দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে গিয়ে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করতেছে, এসবের জবাব জনগণ আগামী ১১তারিখ ইনশাআল্লাহ দেবে। আজকের পথসভা বন্ধ করার জন্য অনেক ষড়যন্ত্র করেছে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী । আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রশাসনের সহযোগিতায় আপনাদের দোয়ায় সফল হয়েছি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে আমার প্রচারণায় বাধা-প্রদান করা হচ্ছে। বিশেষ করে ৪,৫,৬,৭,৮ ও ৯এই ওয়ার্ড গুলোতে আমার পোষ্টার ছিড়ে ফেলা হয়েছে। যারা আমার জন্যে ভোট চাইতে য়ায় তাদেরকে প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। ২০ থেকে ২৫ টি হোড্ডা বাহিনী ফলিয়াপাড়া থেকে বের হয়ে আমার নেতাকর্মীদের চার দিকে ঘিরে ফেলে। এসব ইয়াবা ও ডাকাতি মামলার আসামীরা হোন্ডা নিয়ে আমার ভোটার এবং সমর্থকদের ভয় দেখাচ্ছেন। আমি বলবো আসেন, এসব বাদ দিয়ে ভোটারদের ঘরে ঘরে ভোট ভিক্ষা করি। জনগণ যাকে পছন্দ করেন তাকে ভোট দেবেন, ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে জামী চৌধুরী বলেন, রাজাপালং ইউনিয়নের ৪,৫,৬,৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ড অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ, এই কেন্দ্র গুলোতে অধিকতর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার দাবি করছি।
তিনি সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদিকে উ˜েদ্যশ্য করে বলেন, আপনি আমাকে ছোট ছেলে বলে হেয় করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমি যদি ছোট হই তাহলে আপনার মতো একজন সাবেক সংসদ সদস্য আমি ছোট মানুষকে নিয়ে ভয় পাচ্ছেন কেন? আসলে আপনারা আমাকে নয় জনগণকেই ভয় পান। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে দেখুন জনগণ আপনাদের সাথে আছে কি না?
এসময় প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করেন বলেন, আপনি যে উন্নয়নের কথা বলেন, তাহলে সুষ্ঠু ভোটে আপনার এতো ভয় কীসের? আপনি যদি উন্নয়ন করে থাকেন তাহলে জনগণ আপনাদের এমনিতে ভোট দেবে। ভোট ডাকাতি, বাহির থেকে ব্যালট ঢুকিয়ে জয়লাভ করতে হবে কেন? এবার জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়ে প্রমাণ করুন আপনারা জনগণের সেবক।
রাজাপালং ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বেশ কিছু স্থানীয় মানুষ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাটাতারের বেড়ার ভিতরে রয়েছে। তারা স্বভাবিক জীবন-চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমি যদি নির্বাচিত হই প্রথমে তাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। আর আমার ইউনিয়নে যেসমস্ত বেকার ছেলে-মেয়ে রয়েছে তাদের চাকরির জন্য এনজিওদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করবো। জন্মনিবন্ধন নিয়ে জনগণ যে হয়রানীর শিকার হচ্ছে, আমি যদি নির্বাচিত হই তাহলে প্রতিটি ঘরে ঘরে জন্মনিবন্ধন পৌঁছে দেওয়া হবে, আর হয়রানীর শিকার হতে হবে না। মুসলিম,হিন্দু,বৌদ্ধ ভাইদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বন্ধনে আবদ্ধ রাখার চেষ্ঠা করবো। সর্বোপরি একটি শান্তিপূর্ণ মডেল রাজাপালং ইউনিয়ন জনগণের কাছে উপহার দেবো।
পথসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজাপালং ইউনিয়নের সাবেক ৪ বারের চেয়ারম্যান শাহকামাল চৌধুরী, কুতুপালংয়ের প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট জমি উদ্দিন, তারেক মাহমুদ চৌধুরী, সাইফুর রহমান সিকদার, ব্যারিষ্টার সাফ্ফাত ফারদিন রামিম চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা আবুল হোসেন, জিয়াউল হাসান টিপু, ইসতিয়াক, আবুল হাসান রুবেল, ফারুক, ইমরান খান, শাহনেওয়াজ। পথসভা সঞ্চালনা করেন সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল মালেক মানিক ও আহসান উল্লাহ মণি।
উক্ত পথসভায় দুপুর থেকে রাজাপালং ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড হতে দলে দলে ঘোড়ার সমর্থকেরা যোগদান করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।