আব্দুস সালাম,টেকনাফ:
কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে পর্যটকবাহী জাহাজ কখন চলাচল করবে সঠিক সিদ্ধান্ত হয়নি। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনে কক্ষে বুধবার (১১ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
তিনি জানান, বুধবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে নৌ-সচিব মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়-বিভাগের প্রতিনিধি, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পর্যটন সচিব মোকাম্মেল হোসেনও সভায় উপস্থিত ছিলেন।

ইউএনও জানান, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এ সভার সিদ্ধান্তে জানানো হয় স্থানীয় ভাবে কক্সবাজার জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশ, জনপ্রতিনিধিসহ সভার সমন্বয়ে সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করে জাহাজ চলাচলে অনুমতি দেওয়া যাবে কিনা তা ঠিক করা হবে।

জানা গেছে, নাফনদীর নাব্যতা-সংকট ও নদীতে একাধিক বালুচর জেগে ওঠার কথা উল্লেখ করে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে আয়োজিত এক সেমিনারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নৌ-পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।

এদিকে, পর্যটনের ভর মৌসুমের তিন মাসের অধিক সময় ধরে বন্ধ। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের বিষয় কোন সিদ্ধান্ত না আসায় দ্বীপে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দাসহ হোটেল-রেস্টুরেন্টে মালিক ও এ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজে দায়িত্বরতদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা ও দুশ্চিন্তা।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের টমটম চালক মো. ইসহাক জানান, সেন্টমার্টিনদ্বীপে পর্যটক না আসলে সারাদিন টমটম চালিয়ে দুইশত টাকা পেতেও হিমশিম খেতে হয়। আর পর্যটক আসলে প্রতিদিনে এক থেকে দুই হাজার টাকা উপার্জন করা যায়। তবে দীর্ঘ তিন মাসের অধিক টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপবাসীর জন্য দুঃসংবাদ।

সেন্টমার্টিন সী-প্রবাল বীচ রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মালেক জানান, বিগত তিন মাসের অধিক সময় টেকনাফ- সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ দ্বীপে পর্যটক কমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, দ্বীপ অঞ্চলের মানুষ পর্যটন ব্যবসার ওপর বেশিরভাগ নির্ভরশীল। আজও আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে জাহাজ চলাচলে সরাসরি কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আমরা হতাশায় রয়েছি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান আরও জানান, আমরা চেষ্টা করবো দ্রুত কক্সবাজার জেলা প্রশাসন মহোদয় ও স্থানীয় বিজিবি, কোস্টগার্ড,পুলিশ জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচলের বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার।