বিশেষ প্রতিবেদক:
‘হীরক জয়ন্তী’ উৎসব নিয়ে রাজনীতিকরণ শুরু হয়েছে। এতে উৎসবের সফলতা নিয়ে সন্দিহান দেখা দিয়েছে। ফলে কলেজের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
জানা যায়, গত ২ মাস থেকে দক্ষিণ চট্টলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ কক্সবাজার সরকারি কলেজের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আগামী ৪ঠা মার্চ ‘হীরক জয়ন্তী’ উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে। এ জন্য সার্বজনীন একটি উপদেষ্টা ও আহ্বায়ক কমিটিও করা হয়। কমিটিতে কলেজের সাবেক ভিপি, জিএস ও সব রাজনীতি দলের নেতাকর্মীদের অন্তভুর্ক্ত করা হয়। আহ্বায়ক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান ও সদস্য সচিব কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ফজলুল করিমের নেতৃত্বে রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া চলে। এতে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করে। কিন্তু রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষের পথে ছাত্রলীগের সাবেক কতিপয় নেতকর্মী ‘হীরক জয়ন্তী’ এর কমিটি ও রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাদের দাবি, সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত না করে সাবেক শিবির ক্যাডারদের দিয়ে ‘হীরক জয়ন্তী’ করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে।
বিষয়টি গত ১৯ ফেব্রুয়ারী লং বিচ হোটেলে আহ্বায়ক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান ও সদস্য সচিব কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ফজলুল করিমের সামনে কলেজ ছাত্রলীগ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা উত্থাপন করেন। এসময় তাঁরা ‘হীরক জয়ন্তী’ উদযাপনের কমিটির সবাই সাবেক শিবির ক্যাডার আখ্যা দিয়ে ওই কমিটি বাতিল করান। পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের সমন্বয়ে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। তাদের মতে, গত ত্রিশ বছরে ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, জাসদ ছাত্রলীগসহ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের অসংখ্য নেতা কর্মী হতাহত হয় শিবিরের নির্যাতনে। এসব হতাহতদের চিত্র তুলে ধরেন সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ ছাত্র ইউনিয়নসহ প্রগতিশীল ছাত্র নেতৃবৃন্দ। পরে গত ২১ ফেব্রুয়ারী একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী নিয়ে ‘হীরক জয়ন্তী’ উদযাপনে কমিটি ও বিভিন্ন উপ—কমিটি গঠন করা হয়।
তবে কলেজের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের অভিমত, ‘হীরক জয়ন্তী’ হবে সার্বজনীন। এতে কোন নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপ থাকবে না। কিন্তু বর্তমানে তা রাজনীতির রঙ দেওয়া হচ্ছে। এতে যারা রেজিষ্ট্রেশন করেছে তারা এক প্রকার আতংকে আছে। আদৌ সুষ্ঠুভাবে এই উৎসব হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, মূলতঃ নেতৃত্ব নিয়ে এখানে চরম দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে ‘হীরক জয়ন্তী’ উৎসবে চরম বিশৃঙ্খলার আশংকা রয়েছে। এ জন্য রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করা অধিকাংশ শিক্ষার্থী ‘হীরক জয়ন্তী’ উৎসবে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ‘হীরক জয়ন্তী’ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, দাগী ও নাশকতা আসামীদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সবাইকে সাথে নিয়ে নতুন কমিটি আগামী ৪ঠা মার্চ উৎসাহ—উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ‘হীরক জয়ন্তী’ বাস্তবায়ন করবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।