মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

আগামী শুক্রবার ১০ মার্চ ঢাকাস্থ রামু সমিতির ‘রামু উৎসব-২০২৩’। ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাস্থ তারানগর নিউ ভিশন ইকো রিসোর্টে সকাল ৯ টায় শুরু হয়ে দিনব্যাপী এ উৎসব উদযাপিত হবে।

রামু সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইমুল আলম চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।

ঢাকায় বসবাসরত রামুবাসীদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য এই উৎসবে থাকছে গুণিজন সম্মাননা, ঐতিহ্যবাহী মেজবানি ভোজ, আলোচনা, প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা, র‍্যাফেল ড্র ও শিশুতোষ নানাবিধ আয়োজন। অনুষ্ঠানে রামু-কক্সবাজারের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত থাকবেন বলে আয়োজকেরা জানিয়েছেন।

রামু তথা কক্সবাজার বাসীর সার্বিক কল্যাণ ও দেশের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এবারের আয়োজনে রামু উপজেলার চারজন গুণিজনকে আজীবন সম্মাননা জানানো হবে। যাদেরকে “রামু সমিতি সম্মাননা ২০২৩” প্রদান করা হবে তাঁরা হলেন-বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোমেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডক্টর শিরিন আকতার, রামু উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস.এম মো: শফিকুল ইসলাম প্রকাশ আবুল মনসুর ও রামু সমিতির সাবেক সভাপতি নূর মোহাম্মদ।

রামু সমিতির দায়িত্বশীল সুত্র জানিয়েছে, রামু তথা কক্সবাজারের বিশিষ্টজনেরা উৎসবে উপস্থিত থাকবেন ও ঢাকাস্থ রামুবাসীরা সপরিবারে দীর্ঘদিন পর মিলনমেলায় অংশ নিবেন। “রামু উৎসব ২০২৩” এর আহবায়ক এর দায়িত্ব পালন করছেন রামু সমিতির সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর সরকারের সচিব মোমিনুর রশিদ আমিন।

এবারের আয়োজনের ব্যতিক্রম দিক হলো-রামুর প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণের আহবান জানিয়ে রামু সমিতি-ঢাকার পক্ষ থেকে নানাবিধ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারমধ্যে, যার নামে কক্সবাজারের নামকরণ, ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের ২ শত ২৪ বছরের পুরনো রামু’র অফিসের চরে অবস্থিত দাফতরিক কার্যালয় ও বাসভবনকে ‘জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য জাদুঘর” হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বরাবর আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হয়েছে। এই আবেদন অনুমোদিত হলে কক্সবাজারের পর্যটন সম্ভাবনায় নবদিগন্তের উম্মোচন হবে। এতে হাজার বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ রামুর ঐতিহাসিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে এবং সমৃদ্ধ হবে কক্সবাজারের সামগ্রিক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ভান্ডার।

প্রায় দু’বছর আগে প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের জরিপে রামুর প্রায় ১৭ টি স্থাপনাকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। যা উক্ত আবেদনের দালিলিক অনুলিপি হিসেবে সংযুক্ত করা হয়েছে। রামুর প্রত্নতত্ত্বিক স্থাপনাগুলোকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করে প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণ করার জন্য রামু উৎসব হতে আহবান জানানো হবে।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইমুল আলম চৌধুরী জানান,
শুক্রবার ঢাকাস্থ রামু উৎসব হবে ঢাকাতেই যেন “একখন্ড রামু”। উৎসবকে সাজানো হচ্ছে উপভোগ্য, বাহারি ও নানন্দিক সব আয়োজনের মধ্য দিয়ে।

এ উৎসবে অংশ নিয়ে এ আয়োজনকে সফল করার জন্য আমন্ত্রিত অতিথি, সমিতির সদস্য সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন-ঢাকাস্থ রামু সমিতির সভাপতি ও সাবেক সচিব মিসেস মাফরুহা সুলতানা ও সাধারণ সম্পাদক সাইমুল আলম চৌধুরী।

প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে ঢাকাস্থ রামু উপজেলাবাসীদের সামাজিক সংগঠন রামু সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। যেখানে রামুবাসীদের পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, ঐক্য, আস্থার বন্ধনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিগত বছরগুলোতে সংগঠনটি সম্মাননা, মিলনমেলা, পিকনিক, ইফতার, পুনর্মিলনী সহ নানাবিধ আয়োজন করার পাশাপাশি সবসময় অসুস্থ রোগীদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে। এছাড়া, কোভিড-১৯ কালীন সময়ে কর্মহীন রামুবাসীদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে ঢাকাস্থ রামু সমিতি।