রহিম আব্দুর রহিম
পৃথিবীতে সবচেয়ে জমজমাট ব্যবসা সেক্স ব্যবসা, যা নিয়ে কাব্য,উপন্যাস,ভিডিও পর্যন্ত নির্মাণ হচ্ছে। অর্থাৎ প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে এই অসভ্য ব্যবসা, সভ্য সমাজে রীতিমতো চলছে।দ্বিতীয় ব্যবসাটি হচ্ছে ধর্ম নিয়ে।এই ব্যবসায় ব্যবহার হচ্ছে সহজ সরল জনমানুষরা,যারা আল্লাহ, ভগবান,প্রভূ বা গডকে পাওয়ার জন্য মসজিদ, মাদ্রাসা, মাজার, মন্দির, গির্জা কিংবা প্যাগুডার দান বাক্সে অর্থ ঢালছে।চালাক ধর্ম ব্যবসায়ীরা বেহেস্ত বা স্বর্গের টিকেট দেবার নামে তাদের এই ব্যবসা সারা পৃথিবীতে ধর্মের লেবাসে চালাচ্ছে। এদের এই ব্যবসা জোরদার হওয়ার মূল কারণ ধর্ম প্রাণদের নীরবতা। একইভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী কলম আজ অপব্যবহার হওয়ার ফলে বিবেকের ব্যারোমিটার বলে খ্যাত সংবাদকর্মীরা সমাজে ঘৃণিত।পত্র-পত্রিকার শেষ নেই।দেশের আনাচে কানাচে সাংবাদিক। এন্ডোয়েট মোবাইল সবার হাতে,গলায় বাহারি ফিতায় ঝুলানো চক্ চকে্ পরিচয় পত্র।বাচ্চার খতনা থেকে শুরু করে কনে- বরের বিয়ের দাওয়াতের ফুটেজও সাংবাদিকদের নিতে হয়।জেনেছি অনেক পত্রিকার ডেস্ক রিপোর্টাদের নাকি পাতি রিপোর্টরা বকশিশ না দিলে সংবাদ প্রচার বা প্রকাশ হয় না। অনেক নামী দামী পত্রিকার সাংবাদিকরাও টুপাইসের জন্য হনহন করে ঘুরে বেড়ান। অথচ এই সাংবাদিকদের পবিত্র কলমই আমাদের ভাষা,পরাধীনতার পথে পথে গেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের জয়গান, ছড়িয়েছেন স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ।মানুষ যাতে কষ্ট না পায়,যাতে মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার ফিরে পায়, সেই মহাক্ষেত্রে সৃষ্টি করাসহ মানবের কল্যাণ সাংবাদিকদের কলম চলেছে।এখন তা প্রায় ভোঁতা।কারণ, জনমানুষের প্রাণের নেতা,সাংবাদিক মুজিব নেই।স্বাধীনদেশে নিপীড়িত,নির্যাতীত জনমানুষের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে যে সংবাদকর্মীদের আবির্ভাব, তাদের চরিত্র কে নষ্ট করলো? কেনো তারা সংবাদ আবিষ্কারের জন্য মরিয়া? । ভুলে গেলে চলবে না, অন্ধকারে আলো জ্বালানোই হলে আলোকিতদের কাজ। যদি এই আলোর ভেতর কুৎসিত অন্ধকার বিরাজ করে তবে এর দায়িত্ব বিবেকবান গোটা জাতির ঘাড়ে এসে পড়ে।আমাদের বুদ্ধিজীবীদের শ্রেণি বহুবিধ, বামপন্থী, ডানপন্থি, মধ্যপন্থি,নীলপন্থী,সাদাপন্থী সর্বোপরি তৈলপন্থী।স্বাধীন বাংলার শৈল্পিক সাংবাদিক বঙ্গবন্ধু সমালোচনা পছন্দ করতেন। যার ফলে বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলের সমালোচকরা অপপ্রচার মেতে উঠার সুযোগ পায়।ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। মূলকথায় আসছি , সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন জাতিকে হতাশ করেছে।কলঙ্কিত করেছে সাংবাদিকতার পবিত্র কলম।সংবাদ সৃষ্টির গোমর ফাঁক করে ‘কুলাঙ্গার’ বিশেষণে সাংবাদিকদের জর্জরিত করেছে দেশের খ্যাতনামা পত্রিকাটি।
ঘটনা আবিষ্কার হয়েছে ২৬মার্চে।প্রথম আলো পত্রিকার সাভার প্রতিনিধি শামসুজ্জামানের একটি রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট পত্রিকার ওয়েবসাইট দেয়া হয়েছিলো,ওই রিপোর্টের সারসংক্ষেপ, “জাতীয় স্মৃতি সৌধের ফটকে হাতে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক দিনমজুর শিশু, ওর নাম জাকির হোসেন।এই প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে বলেছে,’পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম।বাজারে গেলে ঘাঁম ছুটে যায়।আমগো মাছ মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো’।” এই সংবাদ প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে দিয়েই শেষ নয়।আবার তা তাদের ফেইসবুক পেইজে শেয়ার করেছে।বিষয়টি ‘৭১ টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকদের নজরে পড়েছে ।তারা নেমেছে অনুসন্ধানে,এবার তারা কি খুঁজে পেলো,”প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান যে শিশুটির নাম উল্লেখ করেছে জাকির হোসেন। ‘৭১টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক ওই শিশুকে খুঁজে বের করে তার নাম পেয়েছে সবুজ আহমেদ।যে শিশুর বাবা রাজমিস্ত্রী, গ্রাম কুরগাঁও পাড়ায়।শিশুর বয়স সাত বছর,সে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে এবং স্কুল শেষে মাঝে মধ্যে ফুল বিক্রি করে।”এই শিশু জবানবন্দি দিয়েছে, “প্রথম আলোর সাংবাদিক তার হাতে ১০টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে।” সংশ্লিষ্ট পত্রিকার দায়িত্বশীলরা,সারাদেশের জনমানুষের দুঃখ কষ্ট নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন করুক,দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির জন্য কারা দায়ী,সরকার কেনো তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না,রমজান চলছে,পৃথিবীর মুসলিম দেশগুলোতে খাদ্যজাত দ্রব্য ন্যাযমূল্যে দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতায় নেমেছে। প্রতিবেশ দেশ ভারতেও রমজানে দ্রব্যমূল্যের দাম যাতে না বাড়ে, সেদিকে ব্যবসায়ীরা সতর্ক।অথচ,বাংলাদেশ চিত্র ভিন্ন মান সম্পন্ন ইফতার করতে একজনে পেছনে ব্যয় ৭৫টাকা।নিম্নমানের ইফতার ৩০টাকা,যা খেটে খাওয়া নিম্ন মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। এই ধরনের বহুবিধ সঙ্গতির খবর পত্রিকাটি তুলে আনুক,এতে করে দেশের সর্বস্তরের জনমানুষের কাছে পত্রিকাটি পূজনীয় হবারই কথা। ছোট বেলায় মার মুখে শুনেছিলাম,”অতি বড় হবে নাগো ঝড়ে ভাঙ্গবে মাথা,অতি ছোট হবে নাগো ছাগলে খাবে পাতা,”প্রথম আলো এবং জনকন্ঠ পত্রিকাটি দুটি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জনমত গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।এখনও প্রথম আলো পত্রিকাটি স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের তালিকা প্রকাশের দাবীটিকে জন গুরুত্বপূর্ণ দাবিতে পরিণত করতে লেখনী কর্ম অব্যাহত রেখেছে।অথচ সেই পত্রিকার রিপোর্টার, বার্তা সম্পাদক, সম্পাদক ও প্রকাশক কি করে এক অবুঝ শিশুর হাতে ১০টাকা হাতে ধরিয়ে ছবি তুলে? আবার এই অবুঝ শিশুর উদ্ধৃতি দিয়ে ৩০লক্ষ শহীদের রক্ত, লাখ মায়ের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতার পবিত্রতা নষ্ট করে! আমার ধারণা,’প্রথম আলো সংশ্লিষ্টরা ‘৭৪ কৃত্রিমজাল পরানো বাসন্তী আবিষ্কারের মিশনে নামতে পারে,সংবাদ আবিষ্কারক শামসুজ্জামান সরকারের জন্য সতর্ক সংকেত।
(শিক্ষক,কলামিস্ট, নাট্যকার ও শিশুসংগঠক)।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।