সংবাদদাতা
কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে ভবণ নির্মাণকারি প্রতিষ্টান ডেভলোপার কে কে ফাউন্ডেশনের কতিথ এমডি পরিচয়ে বহু মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া ৪ মামলায় ১৮ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবু নায়েম মোঃ ইউছুফ সরওয়ার (৪৫) অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে।
রবিবার (১৮ জুন) কক্সবাজার সদর মডেল থানার সহযোগিতায় সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামের খুলসী থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার আবু নায়েম মোঃ ইউছুফ সরওয়ার চকরিয়ার হারবাং ইউনিয়নের মৃত মৌলভী কবির আহম্মেদের পুত্র। তাকে সিএমএম আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক থানায় পৃথক ১৬টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালী,পাচঁলাইশ,সদর ঘাট লোহাগাড়া ও কক্সবাজারসহ দেশের ৮টি থানায় এই মামলা দায়ের করা হয়। তম্মধ্যে কোতোয়ালী থানার মামলা নং-সিআর ৯৫২/১৭ ও ৯৫০/১৭,সদর ঘাট থানার মামলা নং-সিআর ৮৭/১৬ ও ১৪৬৯/১৬ এতে দীর্ঘ দিন অনুপস্থিত থাকায় আলাদাভাবে ১৮ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হলে সে পালিয়ে এসে কক্সবাজারে আত্মগোপনে থাকে। পুলিশ ও একাধিক সুত্রে প্রকাশ তার নাম আবু নায়েম মোঃ ইউছুফ সরওয়ার হলেও সে একই নামকে তিন ভাগ করে তিনটি এন আইডি জালিয়তির মাধ্যমে তৈরী করে রাখে ৩টি নাম। এর একটি হচ্ছে ১. আবু নায়েম ২.মোঃ ইউছুফ সরওয়ার ৩.আবু নায়েম মোঃ ইউছুফ সরওয়ার।এ ক্ষেত্রে পুলিশ সাজাপ্রাপ্ত আসামী আবু নায়েম মোঃ ইউছুফ সরওয়ারকে ওয়ারেন্ট নিয়ে ধরতে গেলে সে পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে কী নামে ওয়ারেন্ট তা দেখে পরে নাম ভেঙ্গে তৈরী করা এনআইডি দেখিয়ে সে ঐ নামের আসামি নয় বলে কৌশলে বারে বারে পার পেয়ে যায়। একই ভাবে সম্প্রতি লোহাগাড়া থানায় ৮/৯ বছর আগে বিপুল পরিমান মাদক দ্রব্যসহ আটক হয় এই সেই নায়েম। খোজঁ নিয়ে জানাযায় উক্ত মামলায়ও সাজা হয়ে তার বাড়ির মালামাল ক্রোকের আদেশ হলে সে ঐ মামলা উচ্চ আদালতে গিয়ে তার সাজানো নাম পরিবর্তনকৃত এনআইডির মাধ্যমে পার পেয়ে পুলিশ ফাঁকি দিয়ে গ্রেপ্তার এড়িয়ে থাকে।শেষ পর্যন্ত গত ১৪ জুন বিকালে কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশের সহযোগীতায় চট্টগ্রামের খুলসী থানার পুলিশ সাজাপ্রাপ্ত পলাতক নায়েমকে সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে আটক করে রাতেই চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। খুলসী থানার এসআই সোহেল জানান আটক নায়েমের পেটে অসুস্থ জনিত কারণে তাকে পুলিশ প্রহরায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে,১৮ জুন রবিবার আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ঢাকার বনানীর বাসিন্দা ব্যবসায়ী আশরাফুল হক জানান কক্সবাজার শহরের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে তিনিসহ ২৫ জনের নামে কেনা ৮১ শতক জমি ২০১০ সালে ডেভলোপার কেকে ফাউন্ডেশনের সাথে সাড়ে ৪ বছরের মধ্যে ১৬ তলা ভবন নির্মাণের জন্য চুক্তি সম্পাদন করেন। উক্ত ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর ২ বছরের মধ্যে সেই কেকে ফাউন্ডেশনের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বে নির্মাণ কাজ থেমে গেলে তা অদ্যবদি চালু করা সম্ভব হয়নি। এরী মধ্যে কেকে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবু বক্কর মোঃ রফিক ও এমডি ওয়াহিদুল কাদের টিটুসহ ৪ ভাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যাংকসহ সংশ্লিটরা মামলা দায়ের করলে ইতিপুর্বে চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ৩ জন দীর্ঘ প্রায় ২ বছর ধরে কারা ভোগ করলেও আবু নায়েম মোঃ ইউছুফ সরওয়ার জালিয়ত করে বানানো ৩টি এনআইডির উপর ভর করে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কারাগারের বাইরে থাকে দীর্ঘদিন। বর্তমানে কারা মুক্ত এমডি ওয়াহিদুল কাদের টিটু জানান কেকে ফাউন্ডেশনের প্রকৃত চেয়ারম্যান এমডির কারাভোগের সুযোগে তাদের ছোট ভাই আবু নায়েম মোঃ ইউছুফ সরওয়ার নিজেকে কেকে ফাউন্ডেশনের ভুঁয়া এমডি সাজিয়ে নানান জনের কাজ থেকে অবৈধ ভাবে ভাড়া চুক্তি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের বেশ ক্ষতির সম্মুখিন করেছে। এ বিষয়ে তারা চট্টগ্রামে আদালতের প্রতারণার মামলা দায়ের করলে আদালত তা তদন্তের জন্য পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তা ইনেন্সপেক্টর মোজাম্মেল হক জানান সরেজমিনে তদন্ত করে বাদীর আনীত অভিযোগের বেশ সত্যতা পাওয়া গেছে। শীঘ্রই প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষ করে এ ব্যপারে আদালতে প্রতিবেদন দেবেন বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা ইনেন্সপেক্টর মোজাম্মেল।