বিনোদন প্রতিবেদক:
ঈদ অনুষ্ঠান মানেই কণ্ঠশিল্পী এফ এম ইকবাল বিন আনোয়ারের (ডন) নতুন চমক; শ্রোতাদের নতুন কিছু মৌলিক-শ্রুতিমধুর গান শোনার সুবর্ণ সুযোগ। গেল চার-পাঁচ বছরের ধারাবাহিকতায় আবারো ঈদে একক সঙ্গীতানুষ্ঠান নিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার পর্দায় আসছেন কৃষিবিদ এবং ওয়ালটনের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা সময়ের আলোচিত-জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ডন। গেল ঈদুল ফিতরে ‘বল না কানে কানে’- অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বরাবরের মতো সঙ্গীতাঙ্গনে আলোচনার ঝড় তোলেন শিল্পী। সেই রেশ কাটতে না কাটতে আবারো ঈদুল আজহাতে গান নিয়ে শ্রোতাদের সামনে হাজির হচ্ছেন তিনি। ‘লাজুক রূপসী’- শিরোনামের এই অনুষ্ঠানে এবার পাঁচটি গান পরিবেশন করবেন শিল্পী। এটিএন বাংলায় ঈদের ১০ম দিন রাত ১১টায় অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হবে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করবেন কণ্ঠশিল্পী ডনের একমাত্র কন্যা ফাতেমা তুজ জোহরা জাইমা। শিল্পীর এবারের সঙ্গীত আয়োজন পূর্বের অনুষ্ঠানগুলোকে ছাপিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস। সেই সঙ্গে হিন্দি গানের রিমিক আর রিমিক্সের যুগে দারুণ কিছু শ্রুতিধর, মৌলিক গান শোনার সুযোগ পাবেন দর্শকরা।

কণ্ঠশিল্পী ডন তার চমৎকার গায়কীতেই শুধু নন; লেখনীতেও নিজেকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। প্রতিবার ঈদ-অনুষ্ঠানে তিনি শুধু গানই পরিবেশন করেন না, গানের কথা এবং সুরেও ভূমিকা রাখেন। এবারো এর ব্যত্যয় ঘটেনি। ঈদুল আজহার অনুষ্ঠানে যে পাঁচটি গান পরিবেশন করবেন কণ্ঠশিল্পী ডন- তার সবগুলোই শিল্পীর নিজের লেখা এবং সুর করা। আর গানগুলোর সঙ্গীতায়োজন করেছেন সময়ের সব মেধাবী মিউজিক ডিরেক্টররা। ‘বয়স তো একটা সংখ্যা মাত্র খুঁজে দেখ আমার মতোন পাবে না এমন পাত্র’, ‘আমি কেমনে বলো ভুইল্যা যাব আমার সোনাবন্ধুর মুখ দিবানিশা জ্বইল্যা মরি না দেইখা তার মুখ’, ‘শোন গো লাজুক রূপসী বলেছে ওই জোতিষী তোর সাথে হবে আমার হবে রে ধিন তানা ধিন ধিন তানা রে’, ‘আমি কেমনে হবো শাহজাহান তুমি মমতাজ নাইবা হইল্যা রজকিনী আমি চন্ডীদাস ভালোবাসায় বাঁচি বন্ধু বাঁচি বারো মাস’ এবং ‘প্রয়োজনে তোর সাথে করব না প্রেম থাকব আমি একা একা যে বোঝে না প্রেম প্রেম তার সাথে হয়ে লাভ কী দেখা’। পাঁচটি গানের দুটির মিউজিক ডিরেকশনে ছিলেন তরুণ মেধাবী মিউজিশিয়ান রোহান রাজ; একটি এস কে লিটন রহমান এবং অপর দুই গানের সঙ্গীতায়াজনে ছিলেন আরেক তরুণ মিউজিশিয়ান রোমান রহমান।

গান ছাড়া ঈদ অনুষ্ঠান যেমন ফিকে মনে হয়; তেমনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার পর্দায় এফ এম ইকবাল বিন আনোয়ার ডনের একক সঙ্গীতানুষ্ঠান ছাড়া প্রাণহীন-নিরস মনে হয়! ডন মানেই মৌলিক গানের সমাহার। আধুনিক আর ফোকের অনন্য-অনবদ্য মিশেল। ‘বল না কানে কানে’ ’রঙিলা মন’, ‘আমি কেমন কইরা ভুইল্যা যাবো’ ‘চাঁদ রূপসী’ – পূর্বে এটিএন বাংলার পর্দায় কণ্ঠশিল্পী ডনের গাওয়া জনপ্রিয় এবং শ্রোতাপ্রিয় ঈদ অনুষ্ঠানগুলোর একটি। বরাবরের মতো এবারের ঈদেও মৌলিক গান দিয়ে অনুষ্ঠানটি সাজিয়েছেন শিল্পী। অত্যন্ত শ্রুতিধর বাণীসমৃদ্ধ গানগুলোতে আধুনিক-ফোকের একটা মেলবন্ধন তৈরি করা হয়েছে। কপোত-কপোতীর আধুনিক চটুল প্রেমময় কবিতাগুলো যেমন ডনের গানের উপজীব্য; তেমনি গ্রামীন মাটি ও মানুষের জীবন-জীবিকা, পরিবেশ-প্রতিবেশের সন্ধান মেলে কৃষিবন্ধু ডনের গানে। যা এই ঈদেও ব্যতিক্রম নয়।

দিনকে দিন গায়কীতে মুন্সিয়ানার পরিচয় দেয়া শিল্পী ডন এবারো তার শ্রোতাদের প্রত্যাশা পূরণে সমর্থ হবেন বলে বিশ্বাস। বর্তমান প্রেক্ষাপটের কথা চিন্তা করেই মূলত গানগুলো লেখা এবং সুরারোপ। শিল্পী ডন তার সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে গানগুলোকে শ্রুতিমধুর করে তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। যা তিনি বরাবরই করেন। ঈদ অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে ডন বলেন, ‘গানের ব্যাপারে আমি যথেষ্ট খুঁতখুঁতে। সুর এবং লেখা মনঃপুত না হওয়া পর্যন্ত চেষ্টা করি সেরাটা তুলে আনতে। কতটা ভালো গেয়েছি সেটা অনুষ্ঠান দেখার পর গানগুলো শুনে শ্রোতারা বিচার-বিবেচনা করবেন। তবে আমি আমার সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি পূর্বের মতো এবারো সঙ্গীতানুরাগীদের মন ভরাতে পারব।’

ডন আরো যোগ করেন, ‘বরাবরের মতো এবারের গানগুলোও শ্রোতাদের মনের মণিকোঠায় জায়গা করে নিবে এবং মানুষের মুখে মুখে ফিরবে। গানের মাধ্যমে শ্রোতাদের নির্মল বিনোদন দেয়ার চেষ্টাটা আমি শুরু থেকেই করে আসছি। এবারো এর ব্যত্যয় ঘটেনি।’ ভুল কিছু বলেননি শিল্পী। করোনার কঠিন দিনগুলো থেকেই এখন পর্যন্ত গান দিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের মন ভরাতে কাজ করে যাচ্ছেন এ কণ্ঠশিল্পী।

করোনায় জীবন যখন থমকে গিয়েছিল; অবসাদ আর নিরানন্দে মানুষের জীবন যখন বেসামাল- ঠিক ওই সময় খেলাধুলা আর বিনোদনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম গানকে এক সুঁতোয় বাঁধার কাজটি সুনিপুনভাবে করেছেন ক্রীড়াঙ্গন এবং সঙ্গীত ভুবনের জনপ্রিয় ও পরিচিত মুখ ডন। গানের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করার কাজটি করেছেন শক্ত হাতে। মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে, তরুণ প্রজন্মকে মাদক থেকে দূরে রাখতে গানের মাধ্যমে অবদান রেখে যাচ্ছেন ডন। এটিএন বাংলার পর্দার নিয়মিত মুখ হওয়ার আগে অসংখ্য গানের প্রোগ্রাম করেছেন ডন।

গানের মাধ্যমে দর্শক-শ্রোতাদেরও নির্মল আনন্দ-বিনোদন দেয়ার কাজটা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন কণ্ঠশিল্পী ডন। তরুণ প্রজন্মের ক্রেজ কণ্ঠশিল্পী ডন এ পর্যন্ত বহু জায়গায় একক কনসার্ট করেছেন। পল্টনের হ্যান্ডবল স্টেডিয়াম, শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্স, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের শহীদ শেখ কামাল অডিটোরিয়াম, শহীদ নূর হোসেন ভলিবল স্টেডিয়াম, শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ উডেন ফ্লোর ছাড়াও মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে একক কনসার্ট করে ব্যাপক প্রশংসিত হোন শিল্পী। এমন কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ময়ূরপঙ্খী স্টার অ্যাওয়ার্ড, মিরর ম্যাগাজিন কর্তৃক ফ্রন্টলাইন রিয়েল হিরোজ অ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ডন।