আলমগীর মাহমুদ

‘ইসমাইলর অ.. হাঁড়ভাঙ্গার তেল বড় উপকারী বিষ কষ্ট বেদনা পাইলে দিবেন মালিশ করি’…

এক সময় গাঁও- গেরামে মাইকে এমন গান গেয়ে ইসমাইলের অ.. হাঁড়ভাঙ্গার তৈল বিক্রি হতো। ব্যথা বেদনা নাশে তার মরদগিরিতে মন কাঁড়ে নাই কার!

আপদকালীন মজুদে এই
তৈলের শিশি বর্ষা যাপনে গোলার ধনের মতো রইতো ঘরে ঘরে!

মানুষ সব ছঁূড়ে মারলেও তৈলের শিশিটারে পরম ধন করে রেখেছে সিন্ধুকের গোপন কোণায় — তবে.. ‘ইসমাইলের হাঁড় ভাঙ্গাটা নয় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর তৈল শাস্ত্রের স্বাচ্ছাটা..!’

মদনেরাই একসময় মর্দনে রইতো। তাদের বসেরা বুঝে গেছে -‘ এক তেলে গাড়ীর চাকা ঘুরে অন্য তেলে মানুষের মন ফেরে’ সুতারাঙ এটি মদইন্নাদের হাতে রয় কেমনে!

তারা তেলের শিশিটা কেড়ে নিয়ে এমন শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে এখন কি আর তৈল ছাড়া আমাদের একটুও চলে !

তেলবাজির কম্পিটিশনে যে যত বড় অভিনেতা সে-ই আজ সমাজ বাস্তবতায় চরিত্র সার্টিফিকেট দাতা,কর্তা, ব-স!

ঘরে ভালবাসার মানুষ। যোগ্যতম বাবা।পড়শির চোখের আইলেনার। আত্মীয় স্বজনের চোখের মণি। মসজিদ মন্দিরের সভাপতি।

কবি জসিম উদ্দিন, ওমর খৈয়াম,শামশুদ্দিন হাফিজ নয় বিল গেটস,বাফেটের জমানায় আমাদের যেটিইবা অর্জনে সেটি ফেলে দিবার কইনা !

পাবলো পিকাসো,লিওনার্দো ভিঞ্চির তুলির আঁচড়ে পৃথিবী বিখ্যাত ‘মোনালিসা’র মত শিল্প আছে বলে ইটালীর প্রজন্ম তুলির পরিচয়ে বড় হয়।

আজকাল তৈলও আমাদের এমন এক শিল্প! উপরে উঠার হাতিয়ার। পূঁজিছাড়া হওন আমিও কইনা তবে উপরে উঠতে যেয়ে যেন গাইতে না হয়…

‘জীবন নামের রেলগাড়ীটা
পায় না খোঁজে ষ্টেশন।
কোন লাইনে গেলে পাবে
বলবে কারে কে এখন!


লেখক:- বিভাগীয় প্রধান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, উখিয়া কলেজ।  alamgir83cox@gmail.com