আবদুল মালেক,রামু:
কক্সবাজারের রামুতে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদা সহকারে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আনজুমান-এ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ কক্সবাজার ও রামু উপজেলা এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত রামুর ব্যবস্থাপনায় রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৯.০০ ঘটিকার সময় আজিমুশশান জশনে জুলুস (র্যালি)বের করা হয়।
রামু উপজেলা পরিষদ চত্বর হতে শুরু হওয়া জুলুস (র্যালি)রামুর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে রামু হাসপাতাল গেইট সংলগ্ন মাসুমিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা মাঠে এসে সমাপ্ত হয়। পরে সেখানে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং রাসুল (সা:) এর জীবন চরিত নিয়ে আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও আনজুমান-এ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার সভাপতি অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি সৈয়্যদ মুহাম্মদ উল্লাহ নকশবন্দীর সভাপতিত্বে এবং ছদারতে অনুষ্ঠিত মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রামু কক্সবাজার ও ঈদগাঁও আসনের সম্মানিত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল।প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন-ইসলাম শান্তির ধর্ম।ইসলামে জঙ্গিবাদের কোন স্থান নেই।ইসলামে হানাহানির কোন স্থান নেই,ইসলামে সাম্প্রদায়িক তার কোন স্থান নেই।আমরা যদি আমাদের ছেলে সন্তানের জন্মদিন যদি পালন করতে পারি তাহলে যার জন্য আমি আমরা সবাই সৃষ্টি হয়েছি তাঁর জন্মদিন তথা রাসুল (সা) এর জন্মদিন পালন করা সবার ঈমাণী দায়িত্ব।তাই আমরা নিয়ামতের শোকরিয়া জানিয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা) পালন করি।আমরা সবাই যদি রাসুলের জীবনী আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারি তবেই আজকের ঈদে মিলাদুন্নবী পালন সার্থক হবে।
আনজুমান-এ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ রামু উপজেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেকের সঞ্চালনায় মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আনজুমান-এ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ রামুর সাধারণ সম্পাদক মাস্টার ছালামত উল্লাহ। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মোহাম্মদ হোসাইন সানী,রামু উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মন্ডল, রাজারকুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান। এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন- বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক মাওলানা আবদুল আজিজ রজভী।তিনি বলেন,বিশ্বব্যাপী রাসুল (সা.)’র আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
ঐতিহাসিক ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উপলক্ষে আয়োজিত মাহফিলে মহানবীর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন- রামু থানা অফিসার ইনচার্জ আবু তাহের দেওয়ান,মুফতি এস এম আবদুল্লাহ শাহেদ, মাওলানা মুফতি আবদুর রশিদ হক্কানী নকশবন্দী, মাওলানা খাজা বাকিবিল্লাহ, মাওলানা রেজাউল করিম প্রমূখ।
বক্তারা আরো বলেন- আইয়্যামে জাহেলিয়াতের সময়ে আরবরা ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত বর্বর, বেদুঈন, যাযাবর, শিক্ষা ও তমুদ্দিনের আলো থেকে বঞ্চিত একটি জাতি। অন্যায় জুলুম ও অনৈতিকতার সয়লাব চারিদিকে, যেখানে ভুলুন্ঠিত হচ্ছিল মনুষ্যত্ব প্রতিনিয়ত। তখনো মানবজাতি আদিম জাহেলিয়াতের ঘুম থেকে জাগেনি। ঠিক সেই সময় অরাজকতার ঘুটঘুটে অন্ধকারে আকস্মিকভাবে জ্বলে উঠলো আলোক মশাল। সভ্যতার সূর্যোদয়ের দায়িত্ব নিয়ে ৫৭০ সনের১২ই রবিউল আওয়াল পৃথিবীতে আবির্ভূত হলেন সমগ্র মানবজাতির মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। তাঁর যাদুর ছোঁয়ায় নবুওয়াতের মাত্র ২৩টি বছরে আরবরা বিনির্মাণ করলো এক নতুন পৃথিবী। জীবনের ক্ষতস্থান থেকে যে উৎকট দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল তা রাসুল (সাঃ) এর পরশে পরিবর্তিত হয়ে সুবাসিত আলোকবর্তিকায় পরিণত হল। তাই সামাজিক অবক্ষয় রোধ, অন্যায়-জুলুম ও অনৈতিকতার হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে ইনসাফপুর্ন, শান্তিময় ও সমৃদ্ধশালী করার জন্য আমাদেরও রাসুল (সাঃ) এর আদর্শকে অনুসরণ করতে হবে।
এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মাওলানা আবু বকর,মাওলানা রেজাউল করিম, মাওলানা জামাল উদ্দিন, মাওলানা আবদুস সালাম, হাজী নুরুল ইসলাম, আবদুল আজিজ, আজিজুল ইসলাম, মোহাম্মদ ইসলাম, শামসুল আলম, এস এম ছফিউল্লাহ মুনির, মাওলানা তারেকুল ইসলাম নুরী, সাইফুল ইসলাম, আহসানুল হক, মোহাম্মদ ইমরান, এস.এম.আবরারুল হক, মাওলানা নজিবুল আলম, মাওলানা দুলাল, মাওলানা তারেকুল ইসলাম, মাওলানা রমিজ আহমদ, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মাওলানা মিজানুল্লাহ, মাওলানা জাকের, মাওলানা আলম, মাওলানা শাহ আলম, হাফেজ মমতাজ, মাওলানা আবদুল কাদের, মাওলানা আবু সৈয়দ মাওলানা মোজাম্মেল, সাংবাদিক শওকত ইসলাম,তৈয়্যব, ইয়াছিন, মাহের ফয়সাল, আবদুল্লাহ, নাসের ফয়সাল, শহীদ, ফাহিমসহ আনজুমানে নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ কক্সবাজার ও রামু উপজেলার নেতৃবৃন্দ। জুলুসে ইসলামিক ফাউন্ডেশন রামু,হাসপাতাল গেইট মাসুমিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা,ঘোনারপাড়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসা,হযরত জঙ্গলীপীর ইসলামিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা, ইয়ুথ বেঙ্গল সোসাইটি,বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা, ছাত্রসেনা, হিজরি নববর্ষ উদযাপন পরিষদ রামু,গাউসিয়া কমিটিসহ বিভিন্ন মাদরাসা, মসজিদের খতিব ও ইমামবৃন্দ ও বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিগণ জুলুসে অংশগ্রহণ করেন। মিলাদ, কিয়াম, মুনাজাত ও তাবারুক বিতরণের মধ্য দিয়ে মাহফিল সমাপ্ত হয়।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।