ইতিহাস ঐতিহ্য পুরুষ প্রধান কিন্তু নারী ছাড়া ইতিহাস নয়। তাদের অনেকেই সময় সংস্কৃতি সমাজে অসামান্য অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছেন। বাঁধার দেয়াল টপকে আলো ফেলেছেন। সাধারণ থেকে হয়েছেন অসাধারণ। এতে কষ্ট স্বীকার করতে হয়েছে অনেক।

তথাপি অনেকে কষ্ট সংগ্রামের গল্প নিজেরা লিখতেন না, কেউ আবার লিখতে পারতেন না- সামাজিক ও বৈষয়িক চাপে। এমন সঙ্কোচেই আত্মপ্রকাশ বিঘ্ন হয়। আর না লেখার দারুন সুযোগে পুরুষ কল্পনার মাধুরীতে আল্পনা আঁকে নারীর। রচনা করে কাব্য মহাকাব্যের উপন্যাসের।সে তুলনায় ব্যতিক্রম নাজনীন সরওয়ার কাবেরী । মাঠে কাজ করেছেন, বলেছেন সমাজের উন্নয়নের কথা , সেই সাথে লিখেছেন মাদকের বিরুদ্ধে ।

পথ চলায় বিশ্বাস করতেন ‘সাহসই হচ্ছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার’। তিনি হয়তো অনুপ্রেরণা পেয়েছেন হাজারো শুভাকাঙ্ক্ষী থেকে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে, নারীর অধিকারের প্রশ্নে তার আপসহীন লড়াইকে বলা যায় গর্বিত বাবা সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরীর গৌরবোজ্জ্বল উত্তরাধিকারের ফলাফল।জীবনে নানান ঘাতপ্রতিঘাত আসলেও দমে যাননি।

চট্টগ্রাম কলেজ থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করে কর্মজীবন শুরু করেন।জড়িয়ে পড়েন রাজনীতি, সামাজিক নেতৃত্বে। মনে পড়ে উপনিবেশ যাত্রায় রবীন্দ্রনাথের জাপানযাত্রী বইয়ের কথা। তাতে লেখা, ”পরাধীনতা সব চেয়ে বড় বন্ধন নয়, কাজের সংকীর্ণতাই হচ্ছে সব চেয়ে কঠোর খাঁচা।” পুরুষ প্রধান সমাজে নিজেকে ঘর থেকে বাহির করেছেন। তিলে তিলে ত্যাগে সংগ্রামে চলার শক্তি অর্জন করেছেন।

পিতা মাতা স্বামী হারানো একজন নাজনীন সরওয়ার কাবেরী হয়ে উঠেন এক অগ্নি সারথি। ঝাঁপিয়ে পড়েন অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে। সহযোগিতার হাত বাড়ান অসহায়দের। একজন মায়ের উদারতা। সেই প্রেক্ষিতে বলা যায় কিছু মানুষের ঋণ শোধ করা যায় না, যাবে না। জানা অজানায় কত মানুষের পাশে ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে উপকার করেছেন, তা অসাধারণ- অপরিশোধ্য।

বৈরী পরিবেশে বড় হওয়া, উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা, সংসারের সাথে সাথে রাজনীতি করা। তারপর সংগ্রামে যুক্ত থাকা। মোটকথা সংসার ও রাজনীতি জীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। নাজনীন সরওয়ার কাবেরী ডাইনামিক নেতৃত্বে দূর হোক সামাজের অসঙ্গতি, দূর্নীতি স্বজনপ্রীতি।

– এনজেল পাইরিন