প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হলো নারীর প্রতি সহিংসতায় আইনি সহায়তা বিষয়ক ক্যাম্পেইন
গত ২ ডিসেম্বর কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হলো নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে আইনী সহায়তা বিষয়ক ক্যাম্পেইন। ইউএসএইড এর “প্রোমোটিং পিস এন্ড জাস্টিস এক্টিভিটি”র আওতায় ক্যাম্পেইনটি যৌথভাবে আয়োজন করে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদ এবং ইউএসএইড। ক্যাম্পেইনটি মোট চারটি পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথমত, বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি আইনী সহায়তাকারী সংস্থা ব্লাস্ট, ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল একশন (ইপসা), এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদের লিগ্যাল এইড হেল্প ডেস্ক ইউনিভার্সিটির প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আইনী সহায়তা সম্পর্কিত তথ্য প্রদানের জন্য তিনটি হেল্প ডেস্ক গঠন করে। উক্ত হেল্প ডেস্ক থেকে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক আইনী সহায়তার ব্যাপারে তথ্য দেন।
ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় অংশে ছিলো সেমিনার। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে সেমিনার শুরু হয়। সেমিনারে ক্যাম্পেইনের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড.গোলাম কিবরিয়া ভূইয়া ।
তিনি তাঁর বক্তব্যে ফরাসী বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে বলেন যে “জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষনার অনেক আগে অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফ্রেঞ্চ ডিক্লারেশনে মানুষের অধিকারের কথা বলা হয়েছিলো” ।
সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইন বিভাগের প্রভাষক মোঃ নুরুল আমিন ।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন “নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে হাইকোর্ট বিভাগের গাইডলাইন প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে সঠিকভাবে প্রয়োগ করা জরুরী ।
সেমিনারের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএসএইড এর “প্রোমোটিং পিস এন্ড জাস্টিস এক্টিভিটি’র চীফ অফ পার্টি হেথার গোল্ডস্মিথ। তিনি তাঁর বক্তব্যে দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে আইনের শিক্ষার্থীদের বলেন “সমাজের প্রতি একজন দায়িত্বশীল আইনজীবী হওয়ার প্রথম শর্ত হলো একজন সংবেদনশীল মানুষ হওয়া”।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আব্দুল হামিদ। তিনি তাঁর বক্তব্যে আজকের এই অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য “আইন অনুষদকে সাধুবাদ জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য এই ধরনের সেমিনারের অপরিহার্যতার কথা উল্লেখ করেন“।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সচিব প্রফেসর একেএম গিয়াস উদ্দিন বলেন নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিৎ আমাদের নিজেদের পরিবারে বা চারপাশে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সহমর্মিতার মাধ্যমে। শিক্ষার্থীদের নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন মানুষ হওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন ইউএসএইড এর “প্রোমোটিং পিস এন্ড জাস্টিস এক্টিভিটি’র ডেপুটি চীফ অফ পার্টি জনাব নন্দ লাল সূত্রধর। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউএসএইড এর “প্রোমোটিং পিস এন্ড জাস্টিস এক্টিভিটি’র এডভোকেসি এন্ড আউটরিচ অফিসার মিসেস ওয়াহিদা বেগম।
সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোঃ রাজিদুর রহমান। তিনি তাঁর বক্তব্যে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে লিগ্যাল এইড বিষয় অন্তর্ভূক্ত করার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরেও দেশের নারীরা সহিংসতার শিকার হচ্ছে যা অত্যন্ত বেদনার এবং লজ্জার । তিনি সকল অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে ক্যাম্পেইনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
তৃতীয় ধাপে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা নারীর প্রতি সহিংসতা বিরোধী চিত্র প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেন। এ প্রদর্শনী পরিদর্শন শেষে সেমিনারের প্রধান অতিথি হেথার গোল্ডস্মিথ বলেন প্রত্যেকটি ছবিই অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ও হৃদয়গ্রাহী । উপস্থিত সকল অতিথিদের বিবেচনায় চিত্র প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীকে আইনের বই পুরস্কার দেওয়া হয়।
ক্যাম্পেইনের চতুর্থ ধাপে উপস্থিত সকল অতিথিদের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি দল নারীর প্রতি সহিংসতা বিরোধী সচেতনতামূলক লিগ্যাল ড্রামা মঞ্চায়ন করে। সমাজে পারিবারিক সহিংসতা এবং এর প্রতিরোধে লিগ্যাল এইড অফিসে আইনী সহায়তার চিত্র এ নাটকে তুলে ধরা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন বিভাগের প্রভাষক মো. নুরুল আমিন, প্রভাষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, প্রভাষক রায়হাতুল গীর কসবা, প্রভাষক নাজিয়া আক্তার এবং অন্যান্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকামন্ডলী- সহ আইন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আইন বিভাগের প্রভাষক অরুপ রতন সাহা।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।