নাছির উদ্দীন আল নোমান, ঈদগাঁও:

ঈদগাঁও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে যান ও জনচলাচলের সড়ক উপসড়কগুলো পিচ্ছিল হয়ে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কগুলো পিচঢালা ও পাকা হলেও গতকাল একদিনের বৃষ্টিতেই মাটিতে কর্দমাক্ত হয়ে পিচ্ছিল আকার ধারণ করেছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে বিভিন্ন বিলের ফসলি জমি থেকে ইটভাটার জন্য কেটে নেয়া চোরাই মাটিবাহী ডাম্পার ট্রাক থেকে মাটি পড়ে পাকা সড়কজুড়ে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

ঈদগাঁও চৌফলদন্ডী সড়ক, ঈদগাঁও-ফরাজী পাড়া সড়ক, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের কবি নূরুল হুদা সড়ক ও ইসলামপূর ইউনিয়নের খাঁনঘোনা সড়কসহ জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি সড়ক উপ-সড়কেই এ অবস্থা বিরাজ করছে।

এলাকাবাসী জানান, গত দেড় দুই মাসাধিককাল সময় ধরে ঈদগাঁওর বিভিন্ন আবাদি বিলের ফসলি জমি থেকে টপসয়েল কেটে নিচ্ছে একটি চক্র। জালালাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব ফরাজী পাড়ায় লোকালয়ের ভিতরে ফসলি জমিতে অবৈধ ভাবে গড়ে তোলা “টিকে ব্রিক ফিল্ড” এ এসব চোরাই মাটি সরবরাহ করছে তারা। শক্তিশালী এক্সেভেটর দিয়ে রাতদিন উপজেলার বিভিন্ন বিলের ফসলি জমি থেকে এসব মাটি কেটে নিচ্ছে চক্রটি।

মাটিবাহী ওভারলোডেড দ্রুতগামী ডাম্পার ট্রাক চলার সময় সড়কে ছিটকে পড়া মাটি এতদিন শুকিয়ে রাস্তায় লেগে ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজে এসব মাটি চটচটে ও পিচ্ছিল হয়ে সড়কজুড়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পড়েছে উক্ত সড়কে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রী সাধারণ।

কিন্তু লোকালয়ের মাঝে ইটভাটা স্থাপন করে ফসলি জমি থেকে অনবরত টপ সয়েল কেটে নিলেও এ ব্যাপারে রহস্য জনকভাবে নীরব রয়েছে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তর।

ইজিবাইক চালক আবদুর রহমান জানান, ডাম্পার থেকে ছিটকে পড়া মাটি বৃষ্টিতে ভিজে পুরো সড়ক পিচ্ছিল আকার ধারণ করেছে। এতে চরম বিপদের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে বলে জানান অপর চালক নুরুল হক।

টিকে ব্রিক ফিল্ডসহ বিভিন্ন ইটভাটায় রাতদিন টপসয়েল কেটে পরিবহণ করায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, মাটিবাহী দ্রুতগামী ডাম্পারের ধাক্কায় গত ২০২২ সালের ১৪ জানুয়ারি রাতে জালালাবাদ ইউনিয়নের ছাতি পাড়া @”রাস্তার মাথায় মামুনুর রশীদ নামের এক যুবক মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়৷
একই বছরের জানুয়ারীতে আগে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের কালির ছড়ায় মাটিবাহী ডাম্পার চাপায় গুরুতর আহত হয় তিন মোটর সাইকেল আরোহী।

কিন্তু এরপরেও ফসলি জমি থেকে টপসয়েল কেটে নেয়া থামেনি।

জালালাবাদ পূর্ব ফরাজী পাড়ায় জনবসতি ও ফসলি জমির ভিতরে অবৈধভাবে গড়ে তোলা টিকে ব্রিক ফিল্ডসহ আরো বিভিন্ন ইটভাটা থেকে থেকে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত মোটা অঙ্কের মাসোহারা নেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে টপসয়েল কাটার বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সাধুবাদ জানিয়েছে এতদঞ্চলের পরিবেশবাদী সচেতন মহল।