অনলাইন ডেস্ক:

নওগাঁয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী, ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষ। গত দু’দিন ধরে এই জেলায় তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। আজ রবিবার(২৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় নওগাঁর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে গত শুক্রবার ও শনিবার সকাল ৯টায় নওগাঁর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি শীত মৌসুমে নওগাঁর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। এ কনকনে শীতের কারণে আজ রোববার জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ ঘোষণা করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। তবে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নামলে সেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ঘোষণার নির্দেশনা রয়েছে।

এদিকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমবেশি হওয়ায় দুপুর পর্যন্ত বেশি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই মধ্যরাত থেকে পরের দিন দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে সবকিছু। দুপুরের দিকে নিরুত্তাপ সূর্যের কিছুটা আলোর মুখ দেখা গেলেও বিকেল হতেই তাপমাত্রা আবারও নিম্নগামী হচ্ছে। এমন বৈরী আবহাওয়ায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে স্কুল-মাদ্রাসা ও সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধের দাবি জানিয়েছে জেলা শিক্ষক সমিতির নেতারা।

তেঁতুলিয়ায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড
অন্যদিকে দিন দিন শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেলারেল হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। শীতের কারণে বেড়েছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার মতো ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ।

নওগাঁর বদলগাছী কৃষি পর্যবেক্ষণাগার আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, গত শুক্রবার ও শনিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত সপ্তাহে তিন দিন জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি পরিমাপ করা হয়েছিল। আজ রোববার সকাল ৯টায় নওগাঁর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আরও দু-একদিন এই তাপমাত্রা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য জেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয় আজ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ দিন জেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান বলেন, অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক যে অঞ্চলগুলোর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকবে শুধু সেই অঞ্চলের মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে। সকালে তাপমাত্রা কম থাকে। কিন্তু সকাল ১০টার পর স্বাভাবিকভাবেই ১০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা থাকে। এ কারণে মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছে। ১০টার পর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করার প্রয়োজন হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, এনসিটিবি থেকে ভার্চুয়ালভাবে আমাদের জানানো হয়েছে এই বৈরী আবহাওয়ার কারণে যে কয়দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে সেদিনগুলোর পরিবর্তে পরবর্তীতে ছুটির দিন শনিবারে এই ক্লাসগুলো পুষিয়ে দিতে হবে।