সিবিএন ডেস্ক:
চলতি বছরের পাঠ্যবইয়ে সপ্তম শ্রেণির আলোচিত গল্প শরীর থেকে শরিফা। নানা আলোচনা সমালোচনার পর অবশেষে সেই গল্পটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে এ সংক্রান্ত গঠিত পর্যালোচনা কমিটি। গল্পটি চলতি বছর থেকে নাকি আগামী বছর থেকে যাবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পরই এবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে পর্যালোচনা কমিটি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাতে এ তথ্য জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির আহ্বায়ক ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রশীদ।

তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে এ সংক্রান্ত কমিটির সুপারিশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। এখন পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সেখানে কী সুপারিশ করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুপারিশ যেহেতু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জমা দিয়েছি তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।

কমিটির অন্য একজন সদস্য জানান, সপ্তম শ্রেণির ওই গল্পের বেশ কিছু শব্দ নিয়ে কমিটির কয়েকজন সদস্য আপত্তি করেছেন। পরে গল্পটি বাদ দেওয়া সুপারিশ করা হয়েছে।

তিনি জানান, কমিটি এই গল্পে ব্যবহৃত ১৯টি শব্দ ‘ইসলাম ধর্ম’ ও ‘বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থার’ সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন এবং এতগুলো সন্দেহ বাদ দেওয়ার পর গল্পের সারমর্ম আর কিছু বাকি থাকে না। তাই গল্পটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছি।

চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক : বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে আলোচনায় আসেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস। এরপর বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। তার চাকরিচ্যুতি এবং এই গল্পের বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, বিশেষজ্ঞ কমিটি প্রতিবেদন সরাসরি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে‌ এ নিয়ে আমরা কোনো তথ্য জানি না। মন্ত্রণালয় যদি আমাদের কোনও সংশোধনী বা নির্দেশনা দেয়, সেটা আমরা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করব।

এরপর ২৪ জানুয়ারি ‘শরিফার গল্প’ নামে গল্পটি পর্যালোচনা করার জন্য উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাঁচ সদস্যের এই কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুর রশীদকে। আর কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মুফতি মাওলানা কফিল উদ্দীন সরকার, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক আবদুল হালিম এবং ঢাকা আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ।

কমিটি দীর্ঘ সময় একাধিক বৈঠক করে এই প্রতিবেদন তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জমা দিয়েছে।