আনোয়ার হোছাইন , ঈদগাঁও:

কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে মর্মান্তিক খুনের শিকার শিশু নুরুল আমিন প্রকাশ বাবু’র(৬) মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে পরদিন মঙ্গলবার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

ঘটনার ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও শিশুটি কিভাবে খুনের শিকার হল তার কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ শিশুর হত্যাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অবিলম্বে খুনের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও খুনিকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা জানান, এটি যে হত্যাকান্ড এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। উদ্ধারকৃত শিশুর শরীরের একাধিক স্থানে তাজা রক্ত দৃশ্যমান। এঘটনায় এখনো পর্যন্ত মামলা বা কোন অভিযোগ করেনি কেউ। তবে হত্যার রহস্য উদঘাটন ও ঘাতককে চিহ্নিত করতে পুলিশের তদন্ত চলমান আছে।

উল্লেখ্য, বিগত ৩ জুন (সোমবার) বিকালে ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম ভাদিতলা কলেজ গেইট সংলগ্ন এক ঘরের পেছন থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় শিশুটি উদ্ধার হয়।পরে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শিশু স্থানীয় জাফর উল্লাহর সন্তান। ইতিপূর্বে শিশুটির মা মারা গেলে তার পিতা আর কোন বিয়ে করেনি। ঘটনার দিন শিশুটি তার খালুর পাশ্ববর্তী বাসায় গিয়ে এ মৃত্যুর শিকার হয়।

স্থানীয়রা আরো জানান, ঈদগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম ভাদিতলায় অপর একজনের বসতভিটায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করা রোহিঙ্গা ফাতেমা আক্তার তার বাসার পেছনে মুমূর্ষু অবস্থায় শিশু নুরুল আমিন প্রকাশ বাবুকে রক্তাক্ত পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেয় । তার শোর চিৎকারে প্রতিবেশীর এগিয়ে এসে মুমূর্ষু শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, উক্ত বসত ঘরের পেছনের টিনের বেড়া কাটা, একটি কক্ষে রক্তের চিহ্ন এবং বালিশে পায়ের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে দুষ্কৃতকারীরা।

এ বিষয়ে শিশুর খালা ফাতেমা আক্তার জানান, দুপুরে সে বাড়িতে ছিল না, আছরের পর বাসায় ফিরে দেখতে পান ভিতর থেকে বাসার দরজা বন্ধ,উঁকি দিলে দেখা যায় বাড়ির পেছনের টিনের বেড়া কাটা। এতে পেছনে গিয়ে দেখতে পান শিশু নুরুল আমিন প্রকাশ বাবু মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে আছে । স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে শিশু বাবুকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন ময়না তদন্ত শেষে দাফন করা হয় শিশু নুরুল আমিন প্রকাশ বাবুকে।

অপর একটি সূত্র জানায়,স্থানীয় কামরুন্নাহার নামের এক নারী প্রতিদিনের মত বিকালে ঐ বাসার ভিটিতে ঘাস কাটতে যায় । যাওয়ার পথে দেখা হয় ফাতেমা আক্তারের সঙ্গে। পরে মহিলাটি বাসার পেছনে দেখতে পান শিশু বাবু মুমূর্ষু অবস্থায় মাটিতে কাতরাচ্ছে।