এম.এ আজিজ রাসেল, কক্সবাজার:

কক্সবাজার ঘিরে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নে জেলাজুড়ে সমীক্ষা করা হচ্ছে। যা বাস্তবায়নে নেয়া হচ্ছে জনগণের মতামত।

সোমবার (৮ জুলাই) দুপুর ১২ টায় কলাতলীর সৈকত কিন্ডারগার্টেন স্কুলে কক্সবাজার জেলার ‘মহাপরিকল্পনা’ প্রণয়নে “দ্রুত নগর ও আঞ্চলিক মূল্যায়ন” শীর্ষক আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেয়।

প্রকল্পের ডেপুটি টিম লিডার খন্দকার নিয়াজ রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা রোমেনা আকতার। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। এই মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে অচিরেই বদলল যাবে কক্সবাজার। এতে উন্মোচিত হবে অর্থনীতির দ্বার।’

খন্দকার নিয়াজ রহমান বলেন, এ পর্যন্ত সব প্রকল্প আমলা-মন্ত্রীদের পরামর্শে হয়েছে। এতে জনগণের সম্পৃক্ততা ছিল না। যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তেমন একটা উপকারে আসেনি। স্থানীয় মানুষের ক্ষতি করে কোনো উন্নয়ন হতে পারে না। এটি রাষ্ট্র ও জাতির কোনো উপকারেও আসতে পারে না। এতে শুধু মাত্র কিছু মানুষের লাভ হতে পারে। তাই মহাপরিকল্পনায় প্রণয়ন সিদ্ধান্তে জনগণের মতামত গ্রহণ করা হচ্ছে। তাদের পক্ষ থেকে যে মতামত আসছে সেগুলো বিবেচনা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কক্সবাজারকে একটি আধুনিক ও আকর্ষণীয় পর্যটন নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করা, ভূমির ওপর যেকোনো প্রকৃতির অপরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ এবং উক্ত অঞ্চলের সুপরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলার পূর্ণাঙ্গ স্থাপনা পরিকল্পনাসহ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় টেকসই যাতায়াত ও ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা, অবৈধ ও অপরিকল্পিত স্থাপনা অপসারণ, জল ও স্থলের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, দূষণ প্রতিরোধ, বর্জ্য ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন সুবিধা নিশ্চিত করতে কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।’

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন এডহক সি.এস.সি, বাংলাদেশ আর্মির মেজর হাসানুজ্জামান ও কক্সবাজার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোক্তার আহমদ।

কক্সবাজার জেলা মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন প্রকল্পের প্রধান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ‘এডহক সি.এস.সি’ এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইকে আর্কিটেক্টস-সেট্রন জেভি এই সভার আয়োজন করে।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন বাস্তবায়নে প্রকল্পটির আওতায় কক্সবাজার জেলার নয়টি উপজেলা এবং সমুদ্র সৈকত এলাকাসহ মোট ৬৯০.৬৭ বর্গ কি.মি. এলাকার ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) আওতায় আসবে এবং সমগ্র কক্সবাজার জেলার ২৪৯১.৮৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকার জন্য স্ট্রাকচার প্ল্যান প্রণয়ন করা হবে। এ প্রকল্পটির মাঠ পর্যায়ের কাজ গত বছর অক্টোবর মাস থেকে শুরু হয়েছে। আগামী বছর মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জরিপের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।