পেকুয়া(কক্সবাজার)প্রতিনিধিঃ
গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া ইউপি নির্বাচনে পেকুয়া উপজেলার ৬ ইউনিয়নের মধ্যে বারবাকিয়া ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ শুরু হলে ৮ ওয়ার্ডের মধ্যে নৌকার প্রার্থী জি এম আবুল কাশেম ৪৪২২ ভোট পেয়ে ৩০৪ ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ০৬ নং ওয়ার্ড স্থগিত করা হয়েছিল।

পরবর্তী নির্দেশমতে ৩০ ডিসেম্বর বারবাকিয়া ইউপির ০৬ নং ওয়ার্ডের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়।
কেন্দ্রের সর্বশেষ ফলাফলে চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী মাওলানা বদিউল আলম ৪৭৮৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে।
তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জিএম আবুল কাশেম ৪৬১৮ ভোট পেয়েছেন। তবে দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করে নৌকার প্রার্থী জিএম আবুল কাশেম ভোটে প্রভাব বিস্তার, বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে ভোট ডাকাতি ও ইউএনও পূর্বিতা চাকমার পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেন।

এরপর নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করার পর পেকুয়া উপজেলা অনলাইন প্রেস ক্লাবে প্রেস বিফ্রিং করেন নৌকার মনোনীত প্রার্থী জিএম আবুল কাশেম।

তিঁনি বলেন, এর আগে ৮ কেন্দ্রের ফলাফলে আমি ৩০৪ ভোটে এগিয়ে ছিলাম। ওই সময় ৬নং কেন্দ্রটি স্থগিত করেন নির্বাচন কর্মকর্তা। স্থগিত নির্বাচন বৃহস্পতিবার শুরু হওয়ার আগ থেকে জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা বদিউল আলম শিবিরের শীর্ষ ক্যাডারদের এলাকায় এনে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম শুরু করেন। ভয়ভীতি লাগানো শুরু করেন আমার কর্মী সমর্থকদের। যা আমি নির্বাচন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ইউএনও পেকুয়া পূর্বিতা চাকমা ও থানা প্রশাসনকে অবগত করেছি। কিন্তু তারা আমার অভিযোগকে আমলে নেয়নি। এরপর আমি প্রেস ব্রিফিং করে তার প্রতিকার দাবী করেছি।

এদিকে ভোটের আগের দিন উপজেলা প্রশাসন থেকে আমাকে কথা দেয়া হয়েছিল কেন্দ্রে ভোট প্রার্থীরা সকাল ৮টার আগে আসতে পারবেনা। কিন্তু ভোরে গিয়ে দেখি ভোর ৬টা থেকে লোক সমাগম করেন জামায়াত নেতা বদিউল আলম। ওই সময় দেখতে পায় তাদের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা কেন্দ্রের আশে পাশে অবস্থান নিয়েছে। আমি তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি ইউএনওকে অবগত করেছি। কিন্তু ইউএনও আমার কথাকে গুরুত্ব না দিয়ে তিনিসহ তার ড্রাইভার মনু জামায়াত প্রার্থীর সমর্থকদের ঢেকে ঢেকে কেন্দ্রে অবস্থান করার আহ্বান জানাচ্ছেন। আমি মনে করি তিনি কোটি টাকা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থীকে হারিয়ে দেয়ার মিশন নিয়েছিলেন।

এরপর সকাল ১০টার দিকে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা আবারো ভোট ডাকাতি শুরু করলে আমি প্রশাসনকে তা অবগত করি। এমনকি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ভোট বর্জনের হুমকি প্রদান করি। তারপরও ইউএনও পূর্বিতা চাকমা জামায়াত প্রার্থী মাওলানা বদিউল আলমের প্রধান এজেন্ডের মত ভূমিকা অব্যাহত রাখে। এমনকি তারা আমার ছেলেসহ আমার ১৫ জনের মত কর্মী সমর্থককে প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। এগুলোর কোন ব্যবস্থাতো নেয়নি বরং জামায়াত প্রার্থীর সমর্থকদের ঢেকে ঢেকে কেন্দ্রে এনে ইউএনও ভোট আদায় করেছেন। এই রকম সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় আমার কর্মী সমর্থক তা প্রতিরোধ করা শুরু করেন। প্রতিরোধ করতে গিয়ে আমাকে প্রশাসন দিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। অথচ অপর প্রার্থী প্রকাশ্যে কেন্দ্রে আসা যাওয়া করেছেন। এমনকি ইউএনও নির্দেশে আমাকেও লাঞ্চিত করা হয়েছে। ইউএনও পূর্বিতা চাকমার মিশন ছিল জামায়াত নেতা মাওলানা বদিউলকে বিজয় করা। তাতে তিঁনি সফলও হয়েছেন।

এছাড়াও শিবিরের এক সময়ের সন্ত্রাসী ও ক্যাডার মিজবাহর দেয়া আড়াই কোটি বিলি করেন তার পিতা আশরাফ আলী। প্রতিটা ভোট ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ক্রয় করেছেন তিনি। এই টাকা উৎস্য কোথায় তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।

সর্বশেষ আমি বলতে চাই, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জননেত্রী শেখ হাসিনার সৈনিক। হাসিমুখে এই কারচুপির নির্বাচন মেনে নিব। তবে প্রশাসনের সাথে তারা বন্দুকযুদ্ধ করে আমার নামে বদনাম করা হচ্ছে। এটা করে তারা আমার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে ছিনিয়ে নিয়েছে। আমি টাকার কাছে হারলেও ইউএনও’র পরিকল্পিত ঘটনায় আমি হতবাক। এমনকি ইউএনও বিশ্রাম ও খাবার খেয়েছেন চিহৃিত শিবির ক্যাডার মুর্শেদের বাড়িতে। ইউএনও, প্রিজাইডিং ও রিটার্নিং কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে টাকা ভাগভাটোয়ারা করে নিয়েছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ঠ সবার কাছে যাবো। এমন ঘটনার বিচার দাবী করবো। আমি সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা কামনা করছি।