শফিউল্লাহ শফি:
মহেশাখালী উপজেলার ১৮০ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের তিন স্তরে ভাগ করে আয়োজন করা হয় রচনা প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ ১৫ জন শিক্ষার্থীকে দেয়া হয় নগদ প্রাইজবন্ড, সার্টিফিকেটসহ নানা পুরস্কার। শক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান করেন মহেশখালী পেশাজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড।

মহেশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত এই সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মহেশখালী পেশাজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি চট্রগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এর পিএস সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহেশখালী-কুত্বুদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক। পাশাপাশি প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. শিরীন আখতার।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, মহেশখালীকে সত্যিকার অর্থে ডিজিটাল আইল্যান্ডে পরিণত করার লক্ষ্যে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও কারিগরি শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। সেলক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর কার্যক্রম খুব শীঘ্রই শুরু করা হবে।
তিনি আরো বলেন, মহেশখালী পেশাজীবীদের সর্বোচ্চ সংগঠন মহেশখালী পেশাজীবী সমবায় সমিতি অবসরপ্রাপ্ত সম্মানিত শিক্ষকদের সংবর্ধনার এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয় ও প্রেরণাদায়ক। পাশাপাশি আগামী নতুন প্রজন্মের জন্য এটি একটি মহতি ও শিক্ষাণীয় বার্তা।

সভার প্রধান আলোচক চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. শিরীন আখতার বলেন, মহেশখালীর মত দ্বীপাঞ্চলের মানুষ শিক্ষার মানোন্নয়নে তথা শিক্ষকের মান রক্ষায় যে কার্যক্রম নিয়েছে তা অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের জন্য সত্যিই অনুকরণীয় একটা বিষয়। তিনি আরো বলেন, এমপি আশেক উল্লাহ রফিকের মহেশখালী-কুতুবদিয়ার উন্নয়নে যে কাজ করে যাচ্ছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
ড. শিরীন আখতার আরো বলেন, মহেশখালী পেশাজীবীদের ভূমিকা দেখে আমার অবাক লেগেছে। কারন তারা দীর্ঘ সময় পার করলে শিক্ষা গুরুদেও মনে রেখেছেন এবং তাদের মনে প্রাণে সম্মান দেখিয়েছেন। আগামীতেও এ ধরণের কার্যক্রম নিয়ে মহেশখালী পেশাজীবী সমবায় সমিতি এগিয়ে এসে এতদঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও শিক্ষার মানোন্নয়নে ঘটিয়ে ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মানের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে এটাই প্রত্যাশা করি।

উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতি মহেশখালী পেশাজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি ও সরকারের
সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম বলেন, ২০১৫ সালে মহেশখালী পেশাজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড যাত্রা শুরু করে। তখন থেকেই এই উপজেলার অসহায়, দরিদ্র ও নানা সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে থেকে মানবিক কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। করোনাকালে সহায়তা, চিকিৎসা সেবাসহ শীতকালীন সময়ে হতদরিদ্রদের মাঝে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি দিয়েছেন শীতবস্ত্রও। সতারাং আগামী লক্ষৗ হচ্ছে এই উপজেলার শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করা।

তিনি আরো বলেন, মহেশখালীতে চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডের কারণে কর্মচ্যুত ও বাস্তুচ্যুত পরিবারের যোগ্য সন্তানদের জন্য কোটা সুবিধা রেখে উন্নয়ন প্রকল্পের ডিপিপি তৈরির ব্যাপারে ভূমিকা রাখার জন্য উপস্থিত সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক ও জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আইসিটি বিভিষন কান্তি দাশ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এরফান উল্লাহ, যুগ্ম জেলা জজ আলী আক্কাস, প্রফেসর গোলাম কিবরিয়া, সহকারী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক ইসহাক, মহেশখালীর সাবেক ইউএনও মাহফুজুর রহমান, মহেশখালীর ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মোঃ সাইফুল ইসলাম ও মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হাই প্রমূখ। এই সংবর্ধনা ও সম্মাননা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহেশখালী পেশাজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন ও আকতার হোছাইন।