ডেস্ক নিউজ :
পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র নাজমুল আকনকে (২৩) অপহরণ করে জোরপূর্বক বিয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩ অক্টোবর নাজমুল বাদী হয়ে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এক নারীসহ অজ্ঞাত ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নাজমুল মির্জাগঞ্জ উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের জালাল আকনের ছেলে।
নাজমুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমান জানান, নাজমুল পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের নিয়মিত ছাত্র। তিনি সরকারি কলেজের আবাসিক হোস্টেলে থাকেন। দীর্ঘ দিন ধরে নাজমুলকে মুঠোফোনে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রেমের প্রস্তাবসহ বিয়ের প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন এক নারী। কিন্তু নাজমুল রাজি না হওয়ায় ২৭ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী লঞ্চঘাট এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করে। ২৮ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ৭-৮ জন জোর করে তাকে দিয়ে একটি নীল কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে।
ধারণা করা হচ্ছে, এ দিয়ে তারা একটি কাবিননামা তৈরির চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় আমরা দণ্ডবিধির ১৪৩/৩৬৫/৩৭৯/৩৮৪/৫০৬ ধারা অনুযায়ী আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে নাজমুলকে অপহরণ এবং জোরপূর্বক বিয়ের একটি ভিডিও ফুটেজ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি কক্ষে এক নারীর বাম পাশে বসে আছেন নাজমুল। পেছন থেকে নাজমুলের মাথার দুই দিক এক ব্যক্তি ধরে রেখেছেন। সেখানে আর কয়েকজনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এ সময় ওই নারীকে নীল কাগজে স্বাক্ষর করতে দেখা গেছে। স্বাক্ষর গ্রহণের পর নাজমুলকে মিষ্টি খাইয়ে দিলে তিনি তা মুখ থেকে ফেলে দেন।
অভিযুক্ত তরুণী যা বলছেন
যে তরুণীর বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই তরুণী গত ১৫ই অক্টোবর থেকে স্ত্রীর পরিচয়ের দাবিতে কলেজ ছাত্রের গ্রামের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন।
জোর করে বিয়ের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ওই তরুণী।
তরুণী বলেছেন, ” গত বছর (২০২০) এপ্রিল মাস থেকেই ওই ছেলের সঙ্গে আমার প্রেম। আমরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একত্রে বাসাতেও থেকেছি। এখন শুনতে পেয়েছি, আরেকটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আছে। এই কথা আমার বড়ভাই, স্বজনদের জানানোর পর তারা ছেলের সঙ্গে কথা বলে। সে নিজের ইচ্ছাতেই বিয়ে করেছে।”
তরুণীর দাবি, ঢাকার রায়ের বাজারের একটি কাজী অফিসে তাদের বিয়ে হয়েছে।
গত তিনদিন ধরে তিনি ছেলের বাড়িতে এসে উঠেছেন।
”আমার যাই হোক, আমাকে মেরে ফেললেও আমি এখানেই থাকবো,” তিনি দাবি করেন।
ভাইরাল ভিডিওতে যা দেখা গেছে
এই ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
ভিডিওটি সেই সময়ের বলে নিশ্চিত করেছেন তরুণীটি। এই ভিডিওর একটি কপিও আদালতে মামলার সঙ্গে জমা দেয়া হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একজন তরুণী একটি নীল কাগজের বইতে স্বাক্ষর করছেন। পাশেই তরুণ ছাত্রটি বসে রয়েছেন। পেছনে একজন দাঁড়িয়ে তার ঘাড় চেপে তাকে সোজা তাকিয়ে থাকতে বাধ্য করছে।
সেখানে আরও কয়েকজনের উপস্থিতি দেখা যায়।
স্বাক্ষর করার পর একজন লাল শার্ট পরিহিত ব্যক্তি প্রথমে মেয়েটিকে মিষ্টি খাইয়ে দেন। এরপর তরুণের মুখে জোর করে মিষ্টি দেয়া হলে তিনি সেটা ফেলে দেন। তখন তাকে সেই ফেলে দেয়া মিষ্টি উঠিয়ে খাওয়ার জন্য ধমক দেন লাল শার্ট পরা ব্যক্তি।
https://www.facebook.com/coxsbazarnewscbn/videos/1027870384704155
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।