জালাল আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
গণঅধিকার পরিষদের ইফতার মাহফিলে রাজনীতিবিদ , শিক্ষক, সাংবাদিক ও আইনজীবীসহ সমাজের বিশিষ্টজনদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।
আজ ২১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী রোড়ের স্কাই সিটি গ্র্যান্ড হোটেলের ৮ম তলায় দেশের “রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক,শিক্ষক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সম্মানে ” গণ অধিকার পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এই ইফতার ও দোয়া মাহফিল গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক , বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ডক্টর রেজা কিবরিয়ার সভাপতিত্বে এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
আসরের নামাজের পর সংগঠনের যুগ্ন আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম শোয়াইবীর কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে ইফতার মাহফিল শুরু হয়। ইফতার মাহফিলের পূর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি বিশিষ্টজনেরা সরকারবিরোধী আন্দোলন নিয়ে অভিন্ন সুরে বক্তব্য দিয়েছেন।
ইফতার মাহফিলে উপস্থিত হয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য , সাবেক মন্ত্রী ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন,আজ বাংলাদেশ ধ্বংসের কিনারায় ।
জনগণ এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন চাই। অতীতে জনগণের ঐক্য ছাড়া স্বৈরশাসকের পতন হয় নি।
দেশপ্রেমিক এবং জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যের মাধ্যমে আমরা এই সরকারের পতন ঘটাতে চাই।
জনগণের ঐক্য এবং সকল দলের ঐক্য ছাড়া এই সরকারের পতন সম্ভব নয়।তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
ডাকসুর সাবেক দুই বারের ভিপি এবং নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতকালের দেয়া বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন , প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমি ,ডক্টর কামাল মিলে আমরা নাকি ষড়যন্ত্র করছি সরকারকে ফেলে দেওয়ার জন্য।
ডক্টর কামাল হোসেনের ৮৬ বছর বয়স। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এই বয়সে ষড়যন্ত্রের কোন সুযোগ উনার পক্ষে সম্ভব? । এই সরকারের মন্ত্রী গুলো সব দুর্নীতিবাজ। অর্থমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট জালিয়াতি করেছেন।
বাম জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একই রকম বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন , প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আমি আমার ভোটাধিকার চাই। আমার গণতান্ত্রিক অধিকার ফেরত চাই। এটা কি ষড়যন্ত্র?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন উনার অপরাধ কী ?প্রধানমন্ত্রীর অপরাধ হচ্ছে উনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের সমস্ত পথ রুদ্ধ করে দিয়েছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক, বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী বলেছেন, মানব উন্নয়ন ছাড়া কোন উন্নয়ন হয় না। উন্নয়নের প্রথম শর্ত হলো শান্তি ও নিরাপত্তা।অতীতের মতো আবারো একটি প্রহসনের নির্বাচনের আভাস পাচ্ছি। অবাধ ,সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার।তাই এই দাবিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
এ সময় আরো শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এক সময়ের এই সরকারের ঘনিষ্ঠজন খ্যাত এই সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিশিষ্ট কবি ও গবেষক ফরহাদ মজহার, মহাজোট সরকারের অন্যতম শরীক সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির(এরশাদ) প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল করিম ভুঁইয়া, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা
আশরাফ আলী আকন ,ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম বাবলু,
নৈতিক সমাজের চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) শাহ আমিন,জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন ,এবি পার্টির আহ্বায়ক সোলায়মান চৌধুরী, ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গণি, বাংলাদেশ কংগ্রেস এর মহাসচিব
ইয়ারুল ইসলাম,ন্যাশনাল পিপলস পার্টির এডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ,গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান,যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মনজুর মোরশেদ মামুন এবং
ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর একাংশের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী আসম আবদুর রব, বিএনপির আলোচিত নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, কারাবন্দী জামায়াত নেতা আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শামীম সাঈদী, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি, বিএনপির মিডিয়া উইং এর কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান, সোনার বাংলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ,
গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান,
সোহরাব হোসেন, মাহফুজুর রহমান খান, আতা উল্লাহ ,আবু হানিফ, সাদ্দাম হোসেন, শাকিল উজ্জামান, যুবনেতা নাদিম হাসান,ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক আখতার হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সাবেক কয়েকজন আমলা , অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্যরা গণ অধিকার পরিষদে যোগদান করেন। সংগঠনের আহবায়ক ডক্টর রেজা কিবরিয়া তাদেরকে গণঅধিকার পরিষদে স্বাগত জানান।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ডঃ রেজা কিবরিয়া এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে গণ অধিকার পরিষদের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়।
দেশের বিশিষ্টজনদের সম্মানে এটাই ছিল প্রথম ইফতার ও দোয়া মাহফিল ।