সিবিএন ডেস্ক:

২২ দিন ধরে বন্ধ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নয়াপল্টনের প্রধান কার্যালয়। দলটির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ও বন্ধ রয়েছে। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী থাকলেও নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা।

গ্রেফতার আতঙ্কে কার্যালয়ের ওই এলাকায় নেই নেতাকর্মীদের আনাগোনা। সব মিলিয়ে যেন ভূতুড়ে পরিস্থিতি। তবে কার্যালয়ের আশপাশের ফুটপাত দিয়ে সাধারণ মানুষ চলাচল করছে।

রোববার ভোরে শুরু হওয়া ৪৮ ঘণ্টার হরতালে প্রথম দিন দুপুর ১২টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটকের স্বল্প দূরত্বে দুই পাশে রয়েছে পুলিশের কড়া পাহারা। কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি নিরাপত্তা প্রহরীরও দেখা নেই। যতদূর দেখা যায় চোখে পড়ে ময়লা আর ধুলোর আস্তরণ, লিফলেট, পোস্টারের ছেঁড়া অংশ, খালি পানির বোতল, উল্টে থাকা দুটি প্লাস্টিকের চেয়ার।

হরতালের দিনেও সকাল থেকেই এ সড়কে বিএনপি নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি। ফুটপাতে হকারদেরও নেই আগের মতো হাঁকডাক। পুলিশের অবস্থানের কারণে সাধারণ মানুষও এখন নয়াপল্টন এলাকা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। আশপাশের বিভিন্ন মার্কেটেও বেচা-বিক্রি কমে গেছে বলে অভিযোগ দোকান মালিকদের।

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় দলটির মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষ, হতাহত আর গ্রেফতার অভিযানের পর থেকেই তালা পড়ে কার্যালয়ে। কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় পুলিশ। পরদিন গোয়েন্দা পুলিশ সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট কার্যালয়ের সামনে স্টিকার দিয়ে ঘিরে তদন্ত চালায়। এর দুই দিন পর কার্যালয়ের দুই পাশে কাঁটাতারের ব্যারিকেড বসায় পুলিশ। কার্যালয়ের সামনের ফুটপাত দিয়েও সাধারণ মানুষজনের চলাচল বন্ধ রাখা হয়। মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে তখন থেকে কোনো নেতাকর্মী কার্যালয়মুখী হননি। এমনকি ফুটপাত দিয়েও চলাচলে বাধা দেওয়া হয়েছে এতদিন। তবে গত বুধবার থেকে ফুটপাত দিয়ে চলাচল উন্মুক্ত হয়।

গত ১৪ নভেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা চাইলে তাদের কার্যালয়ে যেতে পারেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা বিএনপি লাগিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এর এক দিন পরই কার্যালয়ের সামনে কাঁটাতারের ব্যারিকেড সরিয়ে নেয় পুলিশ। নিরাপত্তা বেষ্টনীও কার্যালয়ের সামনে থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া হয় তখন। পরদিন অবরোধ চলাকালে কয়েকজন নেতাকর্মী বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয় এবং কয়েকজনকে আটক করে। তারপর থেকে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে কর্মকর্তা পর্যায়ের কেউ যাচ্ছেন না। গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকেই এই পরিস্থিতি। সেখানে নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।

Jagonews24 Google News Channelজাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেল।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এখন কার্যালয়ে যাওয়ার মতো পরিবেশ নেই। শুধু নেতাকর্মী নয়, কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও নিরাপদ নন। পুলিশ যাদের পাচ্ছে তাদের গ্রেফতার করছে। এ অবস্থায় কার্যালয় কে খুলবে? দলের সব জ্যেষ্ঠ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাহলে ওই কার্যালয়ে কে বসবে?