দেলওয়ার হোছাইন, সিলেট থেকে
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিবেশ ও নদী রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালনকারী সংগঠন ও মানুষের মধ্যে ভাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা প্রনয়নে মাঠ পর্যায়ের সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ১৬ জানুয়ারি সিলেটের রাতারগুলে তিনদিন ব্যাপি “টেকসই উন্নয়নে পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব” শীর্ষক একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। কর্মশালাটির উদ্বোধনী অনু্ষ্ঠান আজ দুপুর সাড়ে তিনটায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রাতারগুল গ্রাম সংলগ্ন (মাঝের ঘাটের রাস্তা) মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ও অনু্ষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। এতে সভাপতিত্ব করেন ‘মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি’র উপাচার্য ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও ধরা এর উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি সুলতানা কামাল তার বক্তব্যে বলেন, “ধরিত্রী রক্ষায় সচেতন মানুষ হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। এই পৃথিবীকে শুধু আমাদের জন্য নয় বরং পরবর্তী প্রজন্ম যেন সুস্থ এবং সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারে সে লক্ষ্যে পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে”।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেন, “আমাদের এই তিনদিনের কর্মশালার মাধ্যমে আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে আগত পরিবেশকর্মীদেরকে সাথে নিয়ে প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে সামনের দিনগুলোতে দেশের পরিবেশ রক্ষায় যথোপযোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণে সচেষ্ট হবো বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি। জলবায়ু পরিবর্তন একটি সার্বজনীন সমস্যা তাই এর সমাধানও করতে হবে জরুরী ভিত্তিতে”।
প্রধান বক্তা শরীফ জামিল তার বক্তব্যে বলেন “পরিবেশ রক্ষায় যতক্ষণ পর্যন্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করা না যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবেশ রক্ষার যে কোন প্রয়াসই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। আমাদের এই তিন দিনের কর্মশালায় যারা অংশগ্রহণ করেছেন তারা প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট কিছু পরিবেশ সংবেদনশীল এলাকায় স্থানীয়ভাবে সামাজিক নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। আমরা সবাই মিলে কৌশল নির্ধারণ করবো কিভাবে পরিবেশ রক্ষায় মানুষকে আরো বেশি সম্পৃক্ত করা যায়”।
এছাড়াও উদ্ধোধনী আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সারি নদী বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হাই আল হাদী, বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী, সিলেটের পরিবেশ সংগঠক জামিল আহমেদ ও মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহার, সিলেট বন বিভাগের সারি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ সালাহ উদ্দিন, গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. মঞ্জুর আহমদ, গোয়াইনঘাট প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম এ মতিন, সিলেট বন বিভাগের প্রতিবেশ প্রকল্পের সাইট অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন, রাতারগুল বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকার সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাহবুব আলম, সারি নদী বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য আবু হানিফ ও রাতারগুল গ্রাম পরিচালনা কমিটির সভাপতি আরব আলীসহ অন্যান্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের আগে অতিথিবৃন্দ হযরত শাহজালাল (র:) এর মাজার ও ভাষা শহীদ মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘর পরিদর্শন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অংশ হিসাবে রাতারগুল বিষয়ক সংবাদচিত্র প্রদর্শনী ও “টেকসই উন্নয়নে পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব” বিষয়ক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিন দিন ব্যাপি কর্মশালার কর্মসূচীগুলোর মধ্যে রয়েছে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, দলগত আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন। পরিবেশ সংরক্ষণে সংগঠকদেরকে আরো দক্ষ করে গড়ে তুলতে তিনদিনব্যাপি এই কৌশলগত কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।