মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মুক্তি পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট বারের তিন বারের সাবেক সম্পাদক, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। 

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান বলে জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাজিয়া জাহান চৌধুরী সম্পা।

গত ৬ ও ৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদে কার্যকরী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে ৭ মার্চ রাতে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান সিদ্দিকীকে মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার পরদিন ৮ মার্চ সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এস আর সিদ্দিকী কে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথীসহ ২০ জন আইনজীবীকে আসামি করা হয়। নাহিদ সুলতানা যুথি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী।

এ মামলায় গত ৯ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনের তোপখানা রোডে নিজ চেম্বার থেকে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে আটক করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করলে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

পরবর্তীতে ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর জামিন আবেদন নাকচ করে আইনজীবীদের জনপ্রিয় নেতা ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। ব্যারিস্টার মোঃ রুহুল কুদ্দুস কাজলের জামিন আবেদন মহানগর দায়রা জজ আদালতও নামঞ্জুর করে। এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। গত বুধবার (২০ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানি শেষে তাকে স্থায়ী জামিন দেন। 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি লাভের পর ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল কারাগারের প্রধান ফটকে পৌঁছালে একঝাঁক আইনজীবী তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এসময় তাঁর প্রতিক্রিয়ায় দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তাঁকে গ্রেফতারের পর আইনজীবীরা তাঁর জন্য বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করায় তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানান।

ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সুপ্রিমকোর্ট বার এর তিন বার নির্বাচিত সম্পাদক। সর্বেশেষ নির্বাচনেও সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন তিনি। এবার ভোটগ্রহণের পর ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট জটিলতা ও অবৈধ হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনে ভোটগননা বর্জন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে সাধারণ আসনে বিপুল ভোটে সদস্য নির্বাচিত হন এ আইনজীবী নেতা।