দেশজুড়ে আলোচিত রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন সাভারের বেদে সম্প্রদায়ের লোকজন। তাদের দাবি, এটি নতুন কোনো প্রজাতি নয়, বহুকাল ধরেই দেশের নানা অঞ্চলে এই সাপের বসবাস ছিল। তবে সম্প্রতি এর প্রাদুর্ভাব কিছুটা বেড়েছে।

তাদের দাবি, এই সাপটি বিষধর হলেও এর কামড়ে নির্ঘাত মৃত্যু এই কথাটি সত্য নয়। এই সাপের কামড়ে মৃত্যুর হার একেবারেই কম বরং রাসেলস ভাইপারের চেয়েও আরও বিষধর সাপ বাংলাদেশে রয়েছে। আর এই সাপটিকে বিভিন্ন মাধ্যমে যেভাবে ভয়ংকর আক্রমণাত্মক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে সেটি সঠিক নয়। মূলত এই সাপটি খুবই অলস প্রকৃতির হয়ে থাকে। এই সাপ কখনোই কাউকে তেড়ে এসে কামড় দেয় না।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সাপুড়ে সর্দার রঙ্গু মিয়া বলেন, চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ে কেউ আক্রান্ত হলে কোনো ওঝা বা কবিরাজের কাছে না গিয়ে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। সঠিক সময়ে অ্যান্টিভেনম গ্রহণ করলে এই সাপের বিষ থেকে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ।

আরেক সাপুড়ে স্বপন সর্দার বলেন, আমরা ছোট থেকেই সাপ নিয়ে চলাফেরা করি সাপের সাঙ্গেই আমাদের বসবাস। ইদানীং শুনতেছি রাসেলস ভাইপার নামে এক সাপ নিয়ে মানুষ অনেক আতংকিত। তবে এই সাপটির নাম মূলত চন্দ্রবোড়া। এটি অনেক আগে থেকেই আমাদের দেশে বসবাস করে। এটা খুব শান্ত ধরনের সাপ। কেউ বিরক্ত না করলে এটা কাউকে কামড়ায় না। আর এই সাপের বিষের ওষুধও আছে।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ও বেদে পল্লির বাসিন্দা রমজান আহমেদ জানান, সারা দেশে রাসেলস ভাইপার সাপ নিয়ে আতংক বিরাজ করলেও আমাদের এই বেদে পল্লিতে এর কোনো প্রভাব পরেনি। এটি নিয়ে কারও মধ্যে কোনো আতংক বা ভয় কাজ করছে না। পাশাপাশি আমাদের সরকারি হাসপাতালে এই সাপের পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম ও চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। তাই কেউ যদি এই সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন তাহলে কোনো ওঝার কাছে না গিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যাবার পরামর্শ রইল।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে কেউ আক্রান্ত হলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে দ্রুত নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারলে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। এখন পর্যন্ত সাভারে কোনো রাসেলস ভাইপারের কামড়ে আক্রান্ত রোগীর দেখা মেলেনি। তবে আমাদের সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যথেষ্ট পরিমাণ অ্যান্টিভেনম ও সাপের কামড়ের অন্যান্য ওষুধের মজুদ রয়েছে।